গাজীপুরের টঙ্গীতে চোর সন্দেহে আটকের সাত ঘণ্টা পর পুলিশ হেফাজতে রনি মিয়া (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে, দুপুর ২টার দিকে চোর সন্দেহে টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকা থেকে তার স্ত্রীর সহায়তায় স্থানীয়রা তাকে আটক করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় হস্তান্তর করে।
রনি মিয়া টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মীরের বেতকা গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে। সে টঙ্গীর বড় দেওড়া পরান মুলের টেক এলাকার স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। পেশায় তিনি নির্মাণ শ্রমিক বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, রনি মিয়া একজন মাদকাসক্ত। তিনি কোনো কাজ না করে মাদকের টাকা সংগ্রহের জন্য এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েন। তার এসব কার্যক্রমে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার দুপুরে টঙ্গীর বড় দেওড়া এলাকার অজ্ঞাত স্থান থেকে একটি সাবমারসিবল পাম্প এবং কিছু পাইপ চুরি করেন তিনি। চোরাইকৃত মালামালের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেনি। স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা তাকে আটক করে টঙ্গী পশ্চিম থানায় হস্তান্তর করেন।
টঙ্গী পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কানিজ ফাতেমা জানান, হাজতে থাকাকালীন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রনি মিয়া থানা হাজতের ওয়াশরুমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কর্তব্যরত প্রহরী (সেন্ট্রি) রনি মিয়া অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে জানায়। আমি দ্রুত তাকে হাজত থেকে বের করে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বায়েজিদকে সাথে দিযে চিকিৎসার জন্য টঙ্গী শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিলে তাকে সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সোয়া ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
টঙ্গী শহীদ আহসানউল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আশীষ চৌধুরী বলেন, পুলিশ রনি মিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পায়নি। তবে তার নি:শ্বাস খুবই কম ছিল, পালস্ পাইনি বললেই চলে (মেডিক্যাল ভাষায় যাকে বলে ফিভেল পালস্) এবং প্রেসার মাপা যাচ্ছিল না। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর রশীদ বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। রনিকে থানায় কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।