রাজবাড়ীর দেবগ্রামে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু

দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকা ও কাউয়াজানি এলাকায় গত দুইদিন ধরে তীব্র ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে কয়েক কিলোমিটার ফসলের জমির মাঠ নদীর গর্ভে চলে গেছে।

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

Location :

Rajbari
রাজবাড়ীর দেবগ্রামে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু
রাজবাড়ীর দেবগ্রামে পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু |নয়া দিগন্ত

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়ালজানি ও মুন্সিবাজার এলাকায় গত দুইদিন ধরে পদ্মা নদীর ভাঙন চলছে।

এলাকাবাসী জানায়, গত দুই দিনের ভাঙনে প্রায় পাঁচ শ’র বেশি জমি বিভিন্ন ফসলসহ নদীতে বিলীন হয়েছে। আর ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ফসলী মাঠ, কবরস্থান, স্কুল, মসজিদ, কমিটি সেন্টার ও বাজার। তাছাড়া কয়েক শ’ অসহায় মানুষের বাড়িঘর। নদী ভাঙনে দিশেহারা এ অঞ্চলের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন তারা।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বিভাগের (বাপাউমো)নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আব্দুল আল আমিন জানান, দেবগ্রাম ইউনিয়নে নদী ভাঙন নিয়ে কাজ করছি।

আজ বেশি ভাঙন প্রবণ ১৬০ মিটার এলাকার একটি প্রকলন করে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসি অফিসে যাচ্ছি। বরাদ্দ পেলে জরুরি ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও ব্যগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালানো হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিবাজার এলাকা ও কাউয়াজানি এলাকায় গত দুইদিন ধরে তীব্র ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে কয়েক কিলোমিটার ফসলের জমির মাঠ নদীর গর্ভে চলে গেছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবগ্রাম ইউনিয়ন দেশের মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে। এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড বা স্থানীয় প্রশাসন।

স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা জামাল মুন্সী জানান, গত বছরের এই দিনে আমাদের দেবগ্রামে শুরু হয়েছিল ভাঙন। সে সময় আমরা রাস্তা অবরোধ সহ মানববন্ধন এরপর পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র ১২ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ নদীতে ফেলেছিল। তখন কিছুটা হলেও রোধ করা গেছিল নদী ভাঙন। এ বছরে দুইদিন যাবত ভাঙন চলছে।

এখন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলাম। প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। আপাতত জিও ব্যাক ফেলে নদী ভাঙন রোধ করা প্রয়োজন। ২৪ ঘণ্টা পর আমরা মানববন্ধন বা রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি করবো।

কাউয়ালজানি এলাকার সালাম ফকির জানান, জমিতে পাট বুনেছি এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। অনেক পাট সহ জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে। কি করবো বুঝতে পারছি না। যদি ভাঙন স্থানে দ্রুত জিও ব্যাক না ফেলে তাহলে আমাদের এই কাউয়া জানি এলাকা আর টিকবে না।

দেবগ্রাম মুন্সী পাড়ার বাসিন্দা আছিয়া বেগম জানান, রাতে ঘুম হচ্ছে না। তিনবার নদীতে বাড়ি ভেঙেছে। এবার ভেঙে গেলে রাস্তায় থাকা ছাড়া আমাদের উপায় নেই। সরকারের কাছে আমাদের দাবি দ্রুত নদীতে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেন।

দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, বাপ, দাদা,চাচার কবর অনেক আগেই নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে ভাঙনের কবলে। এতো সরকার এলো গেল শুধু আশার বাণী শুনিয়ে গেল। কিন্তু নদী শাসনের কাজ আর করলো না।