মাদারীপুরে যৌতুকের দাবি ও পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্তরা।
দিপ্তী মাদারীপুর শহরের বাদামতলা এলাকার নিতাই মণ্ডলের ছেলে তাপস মণ্ডলের স্ত্রী ও শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার জয়নগর গ্রামের প্রদীপ মণ্ডলের মেয়ে। তার এক বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে দিপ্তীর বিয়ে হয় তাপসের সাথে। বিয়ের সময় স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ দেয়া হলেও যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই দিপ্তীকে মারধর করা হতো। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়েও সংসারে চলতো ঝগড়া। এ নিয়ে দিপ্তী পরিবারের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরহা পাননি। কয়েকবার বাবার বাড়ি চলে যান তিনি। পরে সান্ত্বনা দিয়ে আবারো দিপ্তীকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে আসা হয়। শনিবার দুপুরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তাপস ও তার পরিবার। পরে এটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
দিপ্তীর কাকা গোকুল মণ্ডল বলেন, ‘আমার ভাতিজিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। কোনো অবস্থায় যেন অভিযুক্ত তাপস ও তার পরিবারের লোকজন ছাড় না পায়। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
দিপ্তীর বাবা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘বিয়ের সময় পাঁচ ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিসপত্র দিয়েছি। প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমার একটাই মেয়ে, কিন্তু এভাবে দিপ্তীকে মেরে ফেলবে বুঝতে পারিনি। এ ঘটনার সাথে যারা যারা জড়িত প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।’
নিহতের আত্মীয় বিনোত মণ্ডল বলেন, ‘ছয় মাস আগেও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ফার্ণিচার বানিয়ে দিয়েছি। দোকানদারের সে ঋণ এখনো শোধ করা সম্ভব হয়নি। প্রায়ই মেয়েটিকে মারধর করতো তাপস। কিন্তু এভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করবে জানলে মেয়েকে এ জায়গায় বিয়েই দিতাম না। এ ঘটনার বিচার না হলে অন্য অপরাধীরা আগামীতে আরো বড় অঘটন ঘটাতে সাহস পাবে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আদিল হোসেন জানান, মৃত্যুর আগে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবার থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



