কোটালীপাড়ায় ছাদের পানি নিয়ে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন

আমার আর নার্স হওয়া হলো না। বাবার খুব শখ ছিল আমাকে নার্স বানানোর। আমার কাকা ও কাকাতো ভাইয়েরা বাবাকে খুন করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

রনী আহমেদ, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)

Location :

Gopalganj
কোটালীপাড়া থানা
কোটালীপাড়া থানা |সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাই ও ভাইস্তাদের হামলায় আনন্দ ঘোষ (৪৫) নামে এক মুদি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন তার স্ত্রী মিতা ঘোষ (৩৫)।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামের ঘোষ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

আনন্দ ঘোষ পরলোকগত সুধীর ঘোষের ছেলে।

স্থানীয় সূত্র ও কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জানায়, আনন্দ ঘোষের বাড়ির ছাদ থেকে পানি পড়ে চলাচলের রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ভাইদের সাথে বিরোধ চলছিল। গতকাল রোববার রাতে এ নিয়ে তার স্ত্রী মিতা ঘোষের সাথে মেঝভাই কালাচাঁদ ঘোষের ছেলে সৌরভ ঘোষ ও নয়ন ঘোষের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা মিতাকে মারধর করলে আনন্দ ঘোষ এগিয়ে আসেন। এ সময় বড় দুই ভাই কালাচাঁদ ঘোষ, যুগল ঘোষ এবং কালাচাঁদের দুই ছেলে কাঠের লাঠি দিয়ে আনন্দ ঘোষকে মারধর করেন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আজ সোমবার সকালে সরেজমিনে আনন্দ ঘোষের বাড়িতে দেখা গেছে শোকের মাতম। তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে অথৈ ঘোষ বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার আর নার্স হওয়া হলো না। বাবার খুব শখ ছিল আমাকে নার্স বানানোর। আমার কাকা ও কাকাতো ভাইয়েরা বাবাকে খুন করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

এক প্রতিবেশী জানান, ছাদের পানি পড়া নিয়ে একাধিকবার সালিশ হলেও কেউ ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত এই তুচ্ছ বিষয়েই প্রাণ গেল।

এদিকে আনন্দ ঘোষের অন্য চার ভাই- গৌরাঙ্গ, কালাচাঁদ, যুগল ও মিলন ঘোষ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন সেন্টু স্যারসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জড়িতরা পলাতক রয়েছে।’

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।