কুমিল্লার চান্দিনায় হালিমা বেগমকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার সৎ ছেলে শাহীন (২৫)। ঘটনার পর থেকে পলাতক ঘাতক।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার বাতাঘাসী ইউনিয়নের সব্দলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই ঘটনাস্থলে থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হালিমা বেগম ছিলেন এমদাদ মুন্সীর তৃতীয় স্ত্রী। এমদাদ মুন্সীর প্রথম স্ত্রী প্রায় তিন বছর আগে মারা গেলে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিন্তু সৎ ছেলেদের নির্যাতনের কারণে দ্বিতীয় স্ত্রী সংসার ছেড়ে চলে যান। পরবর্তীতে তিনি তৃতীয়বারের মতো গত তিন মাস আগে হালিমা বেগমকে বিয়ে করেন।
স্থানীয়রা আরো জানায়, তৃতীয় বিয়েও পরিবারের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে। শাহীন দীর্ঘদিন ধরে সৎ মাকে অপছন্দ করতেন। প্রায়ই ঝগড়া করতেন এবং হুমকি দিতেন। শাহীনের মানসিক অবস্থাও কিছুটা অস্বাভাবিক ছিল।
স্থানীয়দের ধারণা, শাহীন মনে করেছেন যে নতুন মা তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে পারেন।
ঘটনার পর এমদাদ মুন্সীর পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে রাজি নয়। নিহতের আত্মীয়রাও গণমাধ্যমের সাথে যোগাযোগ এড়িয়ে যাচ্ছেন। তবে এমদাদ মুন্সীর পুত্রবধূ শিরিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা অন্য ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার শ্বশুরের ডাক-চিৎকার শুনে এসে দেখি শাহীন ঘর থেকে বের হচ্ছে। আমার শ্বশুর কান্নাকাটি করছে এবং আমার সৎ শাশুড়ি রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে।’
নিহতের স্বামী এমদাদ মুন্সী বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে বাইরে যাই। এসময় আমার স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিল। আমার ছেলে শাহীন পাশের রুমে ছিল, সেই সুযোগে আমার ছেলে শাহীন রুমে ঢুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আমার তৃতীয় স্ত্রী হালিমাকে কুপিয়ে জখম করে করে। পরে আমি ঘরে ঢুকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে দেখে চিৎকার করলে পুত্রবধূসহ অন্যরা ছুটে আসে। প্রথমে কুমিল্লা একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ বাড়ি নিয়ে এলে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ থানায় নিয়ে যায়।’
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামী এমদাদ মুন্সী থানায় অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়নাতদন্ত শেষে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



