প্রতিষ্ঠানে তালা

জামালপুরে ফাজিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি নিয়ে বিরোধ

গত ২৮ জুলাই মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগায় তারা। পরে শিক্ষার্থীদের কঠোর কর্মসূচির হুমকিতে মঙ্গলবার তালা খুলে দিলেও বিরোধ চরমে উঠেছে ।

খাদেমুল বাবুল, জামালপুর

Location :

Jamalpur
বানারেরপাড় ফাজিল মাদরাসা
বানারেরপাড় ফাজিল মাদরাসা |নয়া দিগন্ত

জামালপুরে সদর উপজেলার বানারেরপাড় ফাজিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতিকর নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিষ্ঠানে তালা দিয়েছে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি।

গত সোমবার (২৮ জুলাই) মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে প্রতিষ্ঠানে তালা লাগায় তারা। পরে শিক্ষার্থীদের কঠোর কর্মসূচির হুমকিতে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) তালা খুলে দিলেও বিরোধ চরমে উঠেছে ।

মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই মাদরাসায় গেলে মাদরাসার বতর্মান অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা জয়নাল আবেদীন জানান, গত ১৩ মে মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি গঠনে জামালপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম খান ও মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মো: হাসমত উল্লাহসহ সভাপতি পদে কয়েকজনের নাম ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর বরাবর পাঠানো হয়।

গত ১৭ জুলাই ভাইস চ্যান্সেলরে অনুমোদনক্রমে মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহকে বানারেরপাড় ফাজিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ও মো: হেদায়েতুল্ল্যাহকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য করে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আইউব হোসেন স্বাক্ষরিত একটি পত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠান।

বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় কতিপয় লোক বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস চ্যান্সেলরের পত্রের বিরোধিতা করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে তালা লাগিয়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকার চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়।

এলাকাবাসী জানান, পরে বর্তমান অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা জয়নাল আবেদীনের রহস্যজনক ভূমিকায় আপাতত প্রতিষ্ঠানের তালা খুলে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে ওই মাদরাসায় গেলে বতর্মান অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা জয়নাল আবেদীন জানান, যারা তালা লাগিয়ে ছিলো,তারাই খুলে দিয়েছে । তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসক মাদরাসার এডহক কমিটির সভাপতি। তাই তার সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ হাসমত উল্লাহ্ আমার সরাসরি শিক্ষক । এই মাদরাসায় তার অনেক অবদান আছে । যে কারণে আমি তাকে গভার্নিং বডির সভাপতি করার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম।

মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও সদ্য অনুমতি গভার্নিং বডির সভাপতি হাসমত উল্লাহ্ নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি বানারেরপাড় ফাজিল মাদরাসায় ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছি । মাদরাসার উন্নয়ন ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সারা জীবন কাজ করেছি । এখন আবসরে আছি। আমি মাদরাসার সভাপতি হওয়ার জন্য কোনো তদবির করিনি। বতর্মান অধ্যক্ষই আমাকে সভাপতি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বরাবর প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে গভর্নিং বডির সভাপতি করার অনুমোদন দিয়েছেন। বিভিন্ন দপ্তরে পত্রও দিয়েছেন। যা সর্বমহলে প্রকাশ হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, আমার অজান্তে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে আমাকে গভর্নিং বডির সভাপতি করার অনুমোদন দিয়েছেন। এখন একটি মহল ষড়যন্ত্র করে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন। জীবনের শেষ বয়সে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র কেন? এতে আমি অপমান বোধ করছি ।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি যাদের ৩৫ বছর শিক্ষাদান করেছি,তারাই আজ আমাকে অপমান করার চেষ্টা করছে । এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং বেদনাদায়ক।