প্রেমঘটিত ঘটনার জেরে রংপুর মহানগরীর পার্কের মোড় থেকে দুই পক্ষের হাতাহাতির সময় পিস্তলসহ আটক এনসিপির সদস্যসহ দুই যুবককে মারামারি ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন রাকিবুল ইসলাম তুষার ও রাগিব হাসনাইন। এরমধ্যে রাগিব মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সার্স কমিটির সদস্য।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর পার্কের মোড় থেকে স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে পুলিশে দেয়। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ তাদেরকে আদালতে পাঠালে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে নগরীর মুনশিপাড়া এলাকায় কামাল কাছনার সিয়ামিন সানিয়াত তানজিল (১৯) নামের কিশোর প্রেমিকাকে নিয়ে দেখা করার সময় পার্কের মোড় এলাকার সাবেক প্রেমিক আরাফ গনি অর্থ (১৫)সহ তার লোকজন সিয়ামিনকে মারধর করে। বিষয়টি শুক্রবার সমঝোতা করে দেয় এলাকার কিছু ‘বড় ভাই’।
সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর সিয়ামিন পার্কের মোড়ে দলবল নিয়ে এলে অর্থ ও রায়হানের সাথে তর্কের এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এসময় সিয়ামিন মারধরের শিকার হয়। বিষয়টি স্থানীয়রা আবারো সমঝোতা করে দিয়ে দুই পক্ষকেই নিজ নিজ এলাকায় যেতে বলেন। কিন্তু এরই মধ্যে সিয়ামিন তার তার মামা রাকিবুল ইসলাম তুষারকে খবর দেয় যে, তাকে মারপিট করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী শুভ নামের এক যুবক জানান, কিছুক্ষণের মধ্যেই তুষার ও রাগিব মোটরসাইকেলে করে ৮/১০ জন ছেলেসহ আসেন। এসেই অর্থের মাথায় পিস্তল ঠেকায় তুষার। তাকে বার বার বারণ করা সত্ত্বেও তিনি আবারো দ্বিতীয় দফায় অস্ত্র ঠেকানোর চেষ্টা করলে পার্কের মোড়ের অন্যরা তাদের আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়। এসময়, আটক হওয়ার সময় তারা এনসিপির নেতাদের সাথে কথা বলেছেন। এরমধ্যে একজন এনসিপির পরিচয়ও দেন। পরে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পুলিশ যাচাই-বাছাই ও জিজ্ঞাসাবাদ করে।
এরই মধ্যে থানায় উপস্থিত হন মহানগর এনসিপির কয়েকজন নেতাকর্মী। এরমধ্যে এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়ক শান্তি কাদেরী জানান, ‘আমরাও খবর পেয়ে থানায় এসেছি। রহিব মহানগর এনসিপির সমন্বয়ক সার্স কমিটির সদস্য। সে হিসেবে আমরা বিষয়টি জানতে থানায় এসেছি। কাউকে ছাড়াতে নয়।’
পরে থানায় আসেন মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার তোফায়েল আহমেদ। তিনি আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জানান, যে পিস্তল সদৃশ বস্তুটি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি খেলনা নাকি আসল পিস্তল সেটি ব্যালেস্টিক পরীক্ষার জন্য ফরেনসিকে পাঠানো হবে।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় মারামারি ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় আটকদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ফরেনসকি পরীক্ষায় বস্তুটি অস্ত্র হিসেবে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হবে। গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।



