জুলাই যোদ্ধাদের পেটানো ও রক্তাক্ত করা অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য লজ্জার : সারজিস

রোববার দিনাজপুর শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে দিনাজপুর জেলা এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।

সাদাকাত আলী খান, দিনাজপুর

Location :

Dinajpur
বক্তব্য রাখেন সারজিস আলম
বক্তব্য রাখেন সারজিস আলম |নয়া দিগন্ত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘জুলাই সনদ ঘোষণার দিনে প্রশাসনকে ব্যবহার করে শহীদ পরিবারের সদস্য ও জুলাই যোদ্ধাদের পেটানো, আঘাত ও রক্তাক্ত করা হয়েছে, এটি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য লজ্জার। কাজটি করা হয়েছে শুধু কয়েকটা স্বাক্ষরের জন্য। সেদিনের অপ্রত্যাশিত ঘটনার দায় অন্তর্বর্তী সরকার ও আয়োজকরা এড়াতে পারে না। এছাড়া সরকারের তাড়া ছিল জুলাই সনদ স্বাক্ষরে, এ তাড়ার ভিত্তিতে সবার অংশগ্রহণের বিষয়ে চিন্তা না করেই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে।’

রোববার (১৯ অক্টোবর) দিনাজপুর শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে দিনাজপুর জেলা এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘যে নির্বাচন কমিশন একটা রাজনৈতিক দলকে তাদের প্রাপ্য মার্কাটা দেয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারে না তাদের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন বাংলাদেশে হতে পারে না। শাপলা প্রতীক নিয়েই এনসিপি নির্বাচন করবে, আর এটাতে অন্যায় করা হলে তা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে। নির্বাচন কমিশন আমাদের দেখিয়ে দিক যে, কোন আইনের ভিত্তিতে শাপলা প্রতীক একটি রাজনৈতিক দলকে বা এনসিপিকে বরাদ্দ দেয়া যাবে না। আমাদের যারা আইনজ্ঞ আছেন তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি। এনসিপিকে শাপলা প্রতীক দিতে কোনো বাধা নেই বলে তারা জানিয়েছেন। এ ভিত্তি থেকে আমরা শাপলা প্রতীক চেয়েছি। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, আজকে তিনি এ কথা কোন মুখে বলেন? শাপলা প্রতীক তো আমরা আজকে আবেদন করিনি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা যেদিন নিবন্ধন করেছিলাম সেদিনই শাপলা প্রতীক চেয়েছিলাম। তাহলে বিগত কয়েক মাসে এটা তিনি কেনো মার্কার লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করেননি?’

তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের আগে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল রাস্তাঘাটে নেমে হাহাকার করতো, কর্মসূচি দিয়ে হাহাকার করতো। অনেক অফিসের সামনে ১০ জন লোক দাঁড়ানোর মতো অবস্থা ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, জনগণ তখনই রাস্তায় নেমেছে, যাদের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছে। এখন যদি সেই আস্থার প্রতিদান কেউ, কোনো ব্যক্তি ও কোনো রাজনৈতিক দল না দেয় তাহলে জনগণ তাদের মতো করে আগামীতে যখন সুযোগ হবে এর প্রতিফলন দেখাবে।’

এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলি, আপনারা ইতিহাস থেকে দয়া করে শিক্ষা নেন। জুলাই সনদ আপনারাও চান, আমরাও চাই। আপনারা জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের মতো নামকাওয়াস্তে একটা পেপার চান কিন্তু আমরা নামমাত্র জুলাই ঘোষণাপত্র চাই না বরং জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ও বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা চাই। আমরা সরকারের কাছে নিশ্চয়তা চেয়েছি, এখানে যে বিএনপি গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে রেখেছে ওই গুরুত্বপূর্ণ ৭টি বিষয় ৭০টি অন্য সংস্কারের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। ওই জায়গাটায় পলিসি কী হবে? যদি সনদটা গণভোটে পাস হয় তাহলে ওই জায়গা থেকে ওই গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো হবে কি না এ ক্লিয়ারেন্স অন্তর্বর্তী সরকারকে দিতে হবে। যদি হয় তাহলে আমাদের স্বাক্ষর করতে সমস্যা নেই। আমরা কেন সনদে স্বাক্ষরে বাধা হয়ে দাঁড়াবো? কিন্তু আপনারা স্পষ্ট দেখেছেন, আমরা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছি, এ ক্লিয়ারেন্সগুলো যদি দেয়া হয় তাহলে এনসিপির জুলাই সনদ স্বাক্ষরে কোনো বাধা থাকবে না।’

দিনাজপুর জেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী ফয়সল করিম সোহেবের সভাপতিত্বে সভায় কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ডা. আব্দুর আহাদসহ দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার এনসিপি নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।