কমলগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ, স্বামীসহ প্রেমিকা আটক

সরস্বতি ও বিশ্বজিতের বিবাহ সামাজিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। পরবর্তীতে আর কোনো বিয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্বজিতের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

আসহাবুজ্জামান শাওন, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)

Location :

Maulvibazar
স্বামী বিশ্বজিত দাস ও তার পরকীয়া প্রেমিকা মুন্নী বুনার্জী
স্বামী বিশ্বজিত দাস ও তার পরকীয়া প্রেমিকা মুন্নী বুনার্জী |নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে স্বামীর পরকীয়ার সরস্বতি রবিদাস (২৬) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর পুলিশ নিহতের স্বামী বিশ্বজিত দাস ও তার পরকীয়া প্রেমিকা মুন্নী বুনার্জীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের গাং লাইনের শ্রমিক পাড়া এলাকার চা শ্রমিক মৃত হরিদাসের ছেলে বিশ্বজিত দাস প্রায় ছয় বছর আগে ধলই চা বাগানের গগন রবিদাসের মেয়ে সরস্বতিকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে রয়েছে দুই সন্তান, একজন দুই বছরের ছেলে এবং ছয় মাস বয়সী কন্যা।

নিহতের মা অমলা রবিদাস, বড় বোন সুনিতা দাস ও চাচাতো ভাই শিমুল দাস জানান, সংসার ভালোভাবে চললেও একপর্যায়ে বিশ্বজিত মাধবপুর চা বাগানের গোপাল বুনার্জীর স্ত্রী মুন্নী বুনার্জীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। মে মাসে তিনি সামাজিকভাবে বিবাহ বহির্ভূতভাবে মুন্নীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সাথে একই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। এ সময় সরস্বতিকে বিভিন্ন অজুহাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো।

সরস্বতির মা অমলা রবিদাস জানান, গত বুধবার রাতে বিশ্বজিত ও মুন্নী সরস্বতিকে নির্যাতন করে মুমূর্ষু অবস্থায় বাবার বাড়ি ধলই চা বাগানে নিয়ে যান।

বিশ্বজিত জানান, তিনি আর সরস্বতির সাথে সংসার করবেন না। রাতে অমলা রবিদাস জামাইকে বুঝিয়ে নিজ বাড়িতে রেখে দেন।

পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্বজিত সরস্বতিকে কমলগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়। তবে তিনি সরস্বতিকে অন্য হাসপাতালে না নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় সরস্বতির মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) শামীম আকনজি ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন এবং বিশ্বজিত ও মুন্নীকে থানায় নিয়ে যান।

মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সাবিদ আলী ও ইউপি সদস্যা মালতি রানী বুনার্জী জানান, সরস্বতি ও বিশ্বজিতের বিবাহ সামাজিকভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। পরবর্তীতে আর কোনো বিয়ের তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্বজিতের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু জাফর মো: মাহফুজুল কবির জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।