বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বহিরাগতদের নৃশংস হামলার প্রতিবাদে ‘রেড মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে সংবাদ সম্মেলন ও মৌন মিছিল করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় প্রেসব্রিফিং করেন তারা।
এ সময় পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, গত ৩১ আগস্ট বহিরাগতদের হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। যেখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা সেখানে প্রশাসন ও শিক্ষকরা নীরব থেকেছেন, যা আমাদের ব্যথিত করেছে। এ হামলা শুধু ইট-পাথরের ওপর নয় এটি শিক্ষার্থীদের অস্তিত্ব, স্বপ্ন ও নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।
তিনি আরো বলেন, গত মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে আমরা শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেছি। তখন আমাদের পক্ষ থেকে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। আলোচনার পরে হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করা হবে এবং আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের কোনোরকম প্রশাসনিক বা শিক্ষাগত হয়রানি করা হবে না- এ দুটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত দুটি মেনে নিয়ে ভিসি স্বাক্ষরিত লিখিত নথি প্রকাশ করার আশ্বাস আমাদের দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আমরা এখনও পাইনি। এরমধ্যে গতকাল (বুধবার) আমাদের পুনরায় আলোচনার জন্য ডাকা হয়। ওই দুটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে লিখিত নথি হাতে পেলে আমরা আলোচনায় বসতে রাজি।
এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা মাথায় লাল কাপড় বেঁধে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার সংলগ্ন করিডোর থেকে মৌন মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি নিয়ে করিডোর প্রদক্ষিণ করে তারা কৃষিবিদ চত্বরে পৌঁছান এবং সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন তারা মাথার লাল কাপড় খুলে তা চোখে বেঁধে নেন। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় প্রশাসন অন্ধের ভূমিকায় আছেন- এমনটিই প্রকাশ করেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী মীরা বলেন, ‘আমাদের চোখ এখন যেমন বন্ধ তেমন আমাদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রশাসনের চোখও বন্ধ। তারা এ বর্বর হামলায় আমাদের করুণ অবস্থা দেখতে পাচ্ছেন না। তাদের এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা তাদের অবস্থান বোঝালাম। সেইসাথে আমরা এ হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো: শহিদুল হক বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের গতকাল টেকনিক্যাল ডকুমেন্ট দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা জমা না দেয়ায় সিন্ডিকেট সভা করা সম্ভব হয়নি। সিন্ডিকেট সভা আয়োজনের জন্য নির্দিষ্ট লিখিত শর্ত দরকার যে, এ শর্তে সভা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সেই শর্ত হিসেবে লিখিত ডকুমেন্ট আমাদের হাতে আসতে হবে। শিক্ষার্থীরা লিখিত প্রস্তাব দিলে আমরা আলোচনায় বসে সিন্ডিকেট সভার আয়োজন করতে পারব।’