বোয়ালমারী (ফরিদপুর) সংবাদদাতা
পরিবেশ রক্ষায় নিবেদিত প্রাণ এক যুবক সুমন রাফি। ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবছর নিজের উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার ভাষায়, বৃক্ষরোপণই তার ধ্যানজ্ঞান, আর প্রকৃতির সাথেই তিনি গড়ে তুলেছেন এক গভীর বন্ধুত্ব।
রোববার (২০ জুলাই) রাতে বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে সুমন রাফি বলেন, বৃক্ষরোপণ মানে শুধু গাছ লাগানো নয়, এটি একটি পরিবেশগত আন্দোলন। গাছ লাগানোর মাধ্যমে বায়ু দূষণ কমানো, মাটির ক্ষয় রোধ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ ছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধেও গাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২০০২ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তিনি ১৫,০০০ (পনেরো হাজার) এর বেশি গাছ রোপণ করেছেন। চলতি বছরেই নিজ হাতে ৫ শতাধিক গাছ লাগিয়েছেন এবং আরো ৫ শতাধিক গাছ স্থানীয় মানুষদের উপহার দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই পুরো কর্মসূচির অর্থ তিনি নিজেই বহন করে থাকেন।
সুমন রাফি জানান, ফরিদপুরের মাঝকান্দি থেকে শুরু করে ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে, ছোলনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোয়ালমারী রেলস্টেশন, মধুখালি-ভাটিয়াপাড়া রেললাইনের দুই পাশে, রেনিনগর হাফেজিয়া মাদরাসা, গুনবহা আলমগীর কবির মডেল একাডেমি, তামারহাজী বরকতীয়া হাফেজিয়া মাদরাসা, মুড়াইল মাদরাসা এবং বোয়ালমারীর বিভিন্ন রাস্তা ও সরকারি জমিতে তিনি গাছ লাগিয়েছেন।
প্রতিবছর বর্ষাকালেই এই কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকেন তিনি। তিনি বলেন, যদি কেউ বৃক্ষরোপণ নিয়ে কোনো সহায়তা চান, আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
এ বিষয়ে স্থানীয় মিজানুর রহমান বলেন, সুমন ভাইয়ের মতো মানুষ আজকাল খুব কম দেখা যায়। উনি কোনো স্বার্থ ছাড়া এত বছর ধরে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছেন। এটা সত্যিই প্রশংসনীয় কাজ।
আরেক স্থানীয় বাসিনদআ মুহসিন উদ্দীন জানান, সুমন ভাইয়ের লাগানো গাছের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটা সুন্দর পৃথিবী পাবে বলে আশা করি। তার জন্য শুভকামনা।
প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব গড়তে সুমন রাফির এ নিঃস্বার্থ, একনিষ্ঠ ও নিরব প্রয়াস সত্যিই অনুকরণীয়। তার মতো মানুষের কারণে বাংলাদেশ একদিন সবুজের দেশ হিসেবেই বিশ্বে পরিচিতি পাবে — এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।