দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদের সাংবাদ সম্মেলন

বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতি ঘোষিত কমিটি অবৈধ

সাধারণ পরিবহন মালিকরা আশা করেছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। কিন্তু তারা শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব মুলক আচরন শুরু করলে সাধারণ মালিকদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।

আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস

Location :

Bogra Sadar
দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদের সাংবাদ সম্মেলন
দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদের সাংবাদ সম্মেলন |নয়া দিগন্ত

বগুড়া জেলা বাস-মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এরশাদুল বারী এরশাদ বলেছেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা সকল স্বাভাবিক নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পেশীশক্তির মাধ্যমে রাতের আঁধারে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তা সম্পুর্ণ অবৈধ। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান একটি প্রভাবশালী মহল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গোপনে কমিটি ঘোষণা করেছেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) বগুড়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে এরশাদুল বারী এরশাদ বলেন, ‘আমি বর্তমানে বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাহী কমিটির সভায় সংগঠনের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বিভাগীয় শ্রম দফতর রাজশাহীর পরিচালক কর্তৃক ১২ মার্চ স্বাক্ষরিত চিঠিতে শ্রমবিধিমালা ২০২৫ এর বিধান মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে দেন। ফজলুর রহমান তালুকদারকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান এবং জুয়েল হাসান কে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কামিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

সাধারণ পরিবহন মালিকরা আশা করেছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচিত কমিটির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। কিন্তু তারা শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্ব মুলক আচরন শুরু করলে সাধারণ মালিকদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তফসিল ঘোষণা করে ২৪মে ২০২৫ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কর্মকাণ্ডে তাদের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার আশংকায় জনৈক আফজাল হোসেন একজন পরিবহন মালিক হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। এর প্রেক্ষিতে ২৪মে ২৫ তারিখের নির্বাচনের ওপর হাইকোর্ট দুই মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান একাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে কমিটির অন্য সদস্যদের না জানিয়ে স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন। গত ৩ জুন ২৫ আপিলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। উচ্চ আদালতে নির্বাচনের উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী নতুন করে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের আয়োজন করার কথা। পূর্বের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২০ ও ২১ মে ২০১৫ পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র বিতরণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু গত ২১ মে ২৫ হাইকোর্ট নির্বাচন স্থগিত করায় উক্ত তারিখে মনোনয়ন পত্র বিতরণ হয়নি মর্মে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব জুয়েল হাসান গত ২২মে ২৫ বিষয়টি পরিচালক রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রম দপ্তর রাজশাহীকে লিখিতভাবে অবহিত করেন। এরপরও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান একটি প্রভাবশালী মহল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গোপনে একাই নির্বাচনী কার্যক্রম চলমান রাখেন। এমনকি তিনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অফিস কাউকে না জানিয়ে চারমাথা মেঘসিটি কমপ্লেক্স থেকে বগুড়া শহরের রাজাবাজারে স্থানান্তর করেন। তিনি সেখানে বসে গোপনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে একতরফাভাবে মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমা দেখিয়ে গত ১৪ জুন ২৫ অবৈধ কমিটি ঘোষণা করেন।

বিষয়টি সাধারণ মালিকরা জানতে পেরে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ কারলে তিনি নানা তালবাহানা করেন এবং কাউকে পাত্তা দেন না। একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি তিনি ৩০ জনের মাঝে মনোনয়ন পত্র বিতরণ দেখিয়ে সেখান থেকে পাঁচজনকে মনোনয়ন প্রত্যাহার দেখান। এরপর তিনি ১৪ জুন বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির ২৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন।’

এরশাদুল বারী আরো বলেন, ‘১৪ ও ১৫ জুন ২০২৫ স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ। রাতের আঁধারে গোপনে, বিনাভোটে মূলত বিশেষ গোষ্ঠীকে খুশি করতে ও হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই এই কমিটির তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। বিভাগীয় শ্রম অধিদফতর, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা ও সকল স্বাভাবিক নিয়ম কানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পেশীশক্তির বহিঃপ্রকাশই মূলত: এই বিনা ভোটের কমিটি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ইতোপূর্বে এমন নানাবিধ অনিয়ম প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। বারংবার মধ্যস্থতার আশ্বাস দিয়েও তারা দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কোন ভূমিকা না রেখে বিশেষ এক গোষ্ঠীর ইশারায় নিরব ভূমিকা পালন করেছেন।’