চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাস বয়সী শিশু সেহলিজের লাশ উদ্ধার হয়েছে।
আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে চাক্তাই খালের শুঁটকি পট্টি এলাকায় তার লাশ ভেসে ওঠে। স্থানীয় কিছু যুবক লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে।
এর আগে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে চকবাজারের নবাব হোটেলের পাশে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নালায় পড়ে যায়। অটোরিকশায় থাকা সেহলিজ, তার মা সালমা বেগম এবং চালকসহ আরো একজন যাত্রী ছিলেন। মা সালমা বেগম ও অন্যদের উদ্ধার করা গেলেও শিশু সেহলিজ নিখোঁজ ছিল।
সালমা বেগম জানান, ‘তারা কাপাসগোলায় এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। ফেরার পথে অটোরিকশা ঘোরাতে গিয়ে সেটি খালের মধ্যে পড়ে যায়।’
জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলার কারণে দুর্ঘটনাস্থলে নালার পাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী খোলা ছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিরাপত্তার অভাব এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, ঘটনার পরই চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। তাদের সাথে কাজ করেছে সিভিল ডিফেন্স ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দীর্ঘ সময় ধরে উদ্ধার অভিযান চালানো হলেও শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
গেল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং উদ্ধার অভিযানের নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামে খোলা নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। প্রতি বছরই এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর, আগ্রাবাদ এলাকায় নালায় পড়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। ২০২২ সালে ষোলশহর এলাকায় শিশু কামাল নালায় পড়ে নিখোঁজ হয় এবং তিন দিন পর মুরাদপুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গীপাড়া এলাকায় দেড় বছর বয়সী শিশু ইয়াছিন আরাফাত নালায় পড়ে মারা যায়। চলতি বছরের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় সাত বছরের শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে মারা যায়।