মাওলানা মামুলুল হক

জুলাই অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত সকলের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা উচিত

‘দেশবিরোধী বা ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড হলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও খেলাফত মজলিস কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবে।’

এম আইউব, যশোর অফিস

Location :

Jashore
বক্তব্য রাখছেন মাওলানা মামুলুল হক
বক্তব্য রাখছেন মাওলানা মামুলুল হক |ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, পিআর বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি নিয়ে বড় দুই রাজনৈতিক দলের মুখোমুখি অবস্থান উদ্বেগ তৈরি করছে। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সম্পৃক্ত সকল শক্তির মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা উচিত। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, তবে তা যেন পরস্পরের বিরুদ্ধে বিষোদগারে পর্যবসিত না হয়। কারণ, এ ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ রাজনীতি ফ্যাসিবাদের সুযোগ সৃষ্টি করে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস যশোর জেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, ১৫ বছর ধরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যারা সবচেয়ে বেশি জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অন্যতম। সংগঠনটির একটি গৌরবজনক ইতিহাস রয়েছে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা আজিজুল হকের নেতৃত্বে বাবরী মসজিদ ভাঙচুরের প্রতিবাদে লংমার্চ হয়েছিল। ভারতের পানি আগ্রাসন, কোরআন অবমাননাসহ প্রতিটি অপকর্মের বিরুদ্ধে সংগঠনটি রাজপথে সংগ্রাম করেছে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য অটুট রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজপথে গড়ে ওঠা ঐতিহাসিক ঐক্যকে নস্যাৎ করা যাবে না। বর্তমানে যে রাজনৈতিক সমন্বয়ের ধারা চলছে, যেখানে কেউ কাউকে উৎখাত করছে না বা দমন করছে না, সেটি যেন বজায় থাকে। কেউ যদি আওয়ামী লীগের পুরানো ঐতিহ্যে ফিরে গিয়ে দমন-পীড়নের রাজনীতি করতে চায়, তাহলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবে এবং সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের চলমান নির্বাচন ব্যবস্থায় ভয়ানক শুভঙ্করের ফাঁক রয়েছে। অতীতের তথাকথিত ফেয়ার ইলেকশন মূল্যায়ন করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া যদি আবার নির্বাচন হয়, তবে তাতে নতুন করে ফ্যাসিবাদ জন্ম নেবে।

তিনি আরো বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হলেও এখনো ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশিত হয়নি, যার দায় বর্তমান সরকারের।

তিনি এই জুলাইয়ের মধ্যেই কাঙ্খিত ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবি জানান। তিনি ঘোষণা দেন, দেশবিরোধী বা ইসলামবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড হলে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধেও খেলাফত মজলিস কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবে।

যশোর জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নিয়ামতউল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।