গুরুদাসপুরে কমেছে শিক্ষার্থীর হার ও পাঠ্যবইয়ের চাহিদা

গত বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ভর্তি শিক্ষার্থীদের সংখ্যানুপাত কম হওয়াসহ বাল্যবিয়ে, উপার্জন কর্মে নিয়োজিত, নতুন কারিকুলাম বুঝতে না পারায় ঝরে পড়েছে ১৭০০ শিক্ষার্থী।

আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর)

Location :

Natore
গুরুদাসপুরে কমেছে শিক্ষার্থীর হার ও পাঠ্যবইয়ের চাহিদা
গুরুদাসপুরে কমেছে শিক্ষার্থীর হার ও পাঠ্যবইয়ের চাহিদা |ফাইল ছবি

এক বছরের ব্যবধানে নাটোরের গুরুদাসপুরে কমে গেছে শিক্ষার্থীর হার। ফলে বিনামূল্যের পাঠ্যবইয়ের চাহিদাও কমেছে।

গত বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ভর্তি শিক্ষার্থীদের সংখ্যানুপাত কম হওয়াসহ বাল্যবিয়ে, উপার্জন কর্মে নিয়োজিত, নতুন কারিকুলাম বুঝতে না পারায় ঝরে পড়েছে ১৭০০ শিক্ষার্থী। এরমধ্যে মাধ্যমিকেই কমেছে ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী এবং ৫৮ হাজার ৮০০ বই।

জানা গেছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে ধার্যকৃত ৫১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যের ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ পাঠ্যবইয়ের চাহিদা দিয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৫৩ হাজার ৫০ জন শিক্ষার্থীর বইয়ের চাহিদা ছিল ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬০টি। ফলে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৬৪ হাজার ৭৬০ বইয়ের চাহিদা কম দেয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১টি, দাখিল মাদরাসা ১৬টি, কারিগরি ৯টি, প্রাথমিক ৯২টি, কেজি ৩৫টি এবং এনজিও ২৪টিসহ মোট ২০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য ৫১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যের ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৬০০ পাঠ্য বইয়ের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৩০০ শিক্ষার্থীর ৪২৫০০ বই, ৭ম শ্রেণির ৩৫০০ শিক্ষার্থীর ৩৮৫০০, ৮ম শ্রেণির ৩৪০০ শিক্ষার্থীর ৩৭৪০০ এবং ৯ম শ্রেণির ৩২০০ শিক্ষার্থীর ৪১৯০০ সহ মোট ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ১ লাখ ৬০৩০০ বই। যা ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের চেয়ে ১৪০০ শিক্ষার্থী ও ৫৮৮০০ বই কম।

দাখিল মাদরাসার চাহিদা- ৬ষ্ঠ শ্রেণির ৮০০ শিক্ষার্থীর ১০৪০০ বই, ৭ম শ্রেণির ৭০০ শিক্ষার্থীর ৯১০০, ৮ম শ্রেণির ৬০০ শিক্ষার্থীর ৭৮০০ এবং ৯ম শ্রেণির ৬০০ শিক্ষার্থীর ৮২০০ সহ মোট ২৭০০ শিক্ষার্থীর ৩৫৫০০ বই। যা ২০২৫ এর চেয়ে ১০০ শিক্ষার্থী এবং ৪৮০০ বই কম।

কারগরির ২ হাজার শিক্ষার্থীর ৩৭৪০০ বই। ২০২৫ এর চেয়ে ২০০ শিক্ষার্থী এবং ১৪৬০ বই চাহিদার তুলনায় কম।

এবতেদায়ীর ১ম শ্রেণির ১৫০০ শিক্ষার্থীর ৯ হাজার বই, ২য় শ্রেণির ১৪০০ শিক্ষার্থীর ৮৪০০, ৩য় শ্রেণির ১৩০০ শিক্ষার্থীর ১০৪০০, ৪র্থ শ্রেণির ১২০০ শিক্ষার্থীর ৯৬০০ এবং ৫ম শ্রেণির ১১০০ শিক্ষার্থীর ৮৮০০ বইসহ মোট ৬৫০০ শিক্ষার্থীর ৪৬২০০ বইয়ের চাহিদা দেখানো হয়েছে।

চাহিদা অনুযায়ী ১৫১টি প্রাথমিকের প্রাকপ্রাথমিকে ৩৯০০ শিক্ষার্থীর ৩৯০০ বই, ১ম শ্রেণির ৪৮০০ শিক্ষার্থীর ১৪৪০০, ২য় শ্রেণির ৪৭০০ শিক্ষার্থীর ১৪১০০, ৩য় শ্রেণির ৪৭০০ শিক্ষার্থীর ২৮২০০, ৪র্থ শ্রেণির ৪২০০ শিক্ষার্থীর ২৫২০০ এবং ৫ম শ্রেণির ৩৯০০ শিক্ষার্থীর ২৩৪০০ বই। তবে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের ৫০ শিক্ষার্থী কমলেও এবতেদায়ীতে ২০২৫ অর্থবছরের সমান রয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: সেলিম আকতার বলেন, গত বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং ভর্তি শিক্ষার্থীদের সংখ্যানুপাতে কম দেখানো হয়েছে। বাল্যবিয়ে, উপার্জন কর্মে নিয়োজিত, নতুন কারিকুলাম বুঝতে না পারায় তারা ঝরে পড়েছে।

কয়েকটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও একই ধরনের মন্তব্য করেন।