সিলেটের সাদাপাথর, জাফলং, রাতারগুল, লালাখাল, বিছনাকান্দিসহ জনপ্রিয় কেন্দ্রগুলো নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাস্টারপ্ল্যান কমিটির মহাপরিকল্পনা ঘোষণার দু’দিন পর সিলেট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ্ব পর্যটন দিবসে নানা কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি চলছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব পর্যটন দিবসে জেলা প্রশাসনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সকাল সাড়ে ৭টায় সার্কিট হাউজের সামনে থেকে সাইকেল র্যালি, সকাল ১০টায় ডিসি অফিস থেকে র্যালি, সকাল ১১টায় সারদা হলে আলোচনা সভা, বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সারদা হল প্রাঙ্গণে মেলা, বিকেল ৩টায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং ৪টায় সারদা হলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এদিকে, সিলেটের ছয়টি পর্যটনকেন্দ্রকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি, লালাখালসহ ছয়টি পর্যটন কেন্দ্রকে নিয়ে এ মহাপরিকল্পনা করা হচ্ছে। পর্যটন শিল্পকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি আনার লক্ষ্যেই এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পানি সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন কার্যক্রম সমন্বয় সংক্রান্ত গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আ ন ম বজলুর রশিদের নেতৃত্বে পরিবেশ বিজ্ঞান, স্থাপত্য, নগর পরিকল্পনা, পর্যটন ব্যবস্থাপনা ও সরকারি-বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শনে আসেন।
পরিদর্শনকালে তারা সাদাপাথর এলাকা ঘুরে দেখেন এবং পর্যটনকেন্দ্রের বর্তমান অবস্থা, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রাসহ মাঠপর্যায়ে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন।
এ সময় কমিটির সদস্যরা জানান, একটি দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। যাতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষিত থাকে এবং স্থানীয়রা উপকৃত হন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পর্যটনকেন্দ্রটি উন্নয়ন, পর্যটকদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই এ মহাপরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে পর্যটনকেন্দ্রতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে।
মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী পর্যটকদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, যেমন- উন্নত সড়ক যোগাযোগ, পর্যাপ্ত আবাসন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সেবা, পরিচ্ছন্নতা ও তথ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার সুস্পষ্ট রূপরেখা থাকবে। বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আন্তর্জাতিক মানের অবকাঠামো তৈরি এবং স্থানীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে উপস্থাপন করার ব্যবস্থা থাকবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইকো-ট্যুরিজমের উপরও গুরুত্ব দেয়া হবে যাতে স্থানীয় বাসিন্দারা সরাসরি উপকৃত হন।
সাদাপাথর পরিদর্শনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ডিন প্রফেসর ড. আবু সাইদ এম আহমদ, বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মো: আলী রেজা খান, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: সারোয়ার আলম, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রবিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শুক্রবার রাতে জানান, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের নানা দিক আজকের কর্মসূচি পালনের সময় আলোচনায় উঠে আসবে।