কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি-জামায়াতের হয়ে দুই ভাই মুখোমুখি

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি’র আজিজুর রহমান ও তার ভাই জামায়াতের মোস্তাফিজুর রহমান মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছেন, যা স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম

Location :

Kurigram
বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান ও তার ভাই জামায়াতের মোস্তাফিজুর রহমান
বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান ও তার ভাই জামায়াতের মোস্তাফিজুর রহমান |নয়া দিগন্ত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুড়িগ্রাম-৪ আসন এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আপন দুই ভাই- একজন বিএনপির, অন্যজন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী। স্থানীয় রাজনীতিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও কৌতূহল।

গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। তার মধ্যে কুড়িগ্রাম-৪ (আসন ২৮) থেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন আজিজুর রহমান।

অন্যদিকে, জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত হয়েছেন তারই ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। দু’ভাইয়ের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পর্যন্ত আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৪১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭১১, নারী ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৯২ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯ জন। আসনটি গঠিত হয়েছে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলা নিয়ে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কুড়িগ্রাম-৪ আসনটি ঐতিহাসিকভাবে বিএনপি ও জামায়াত- উভয় দলের শক্ত ঘাঁটি। তাই দু’ভাইয়ের এই মুখোমুখি লড়াই জাতীয় রাজনীতিতেও ব্যাপক আগ্রহের জন্ম দিয়েছে।

এক প্রবীণ রাজনীতিক বলেন, ‘রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারীর ইতিহাসে ভাইয়ের বিপরীতে ভাইয়ের এমন লড়াই আগে দেখা যায়নি। এটি নির্বাচনী মাঠে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন সবার প্রশ্ন- কে এগিয়ে?’

ভোটারদের মাঝেও উত্তেজনা বেশ। কেউ বলছেন, এটি পরিবারের ভেতর রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিচ্ছবি; আবার কেউ দেখছেন গণতান্ত্রিক প্রতিযোগিতার এক অভিনব উদাহরণ হিসেবে।

স্থানীয়দের মতে, ফল নির্ভর করবে দু’দলের সাংগঠনিক শক্তি, মাঠ পর্যায়ের তৎপরতা এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার ওপর।

জামায়াত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক বলেন, ‘আমার বড় ভাই বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছেন। তিনি মনোনয়ন পেলেও আমাকে হারাতে পারবেন না। জামায়াতের জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেড়েছে। দু’ভাই প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনে তেমন প্রভাব পড়বে না।’

অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ছোট ভাই একসময় বিএনপি করত। আমার কারণেই সে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরে জামায়াতে যোগ দেয়। আমাকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার ফলে সে এখন নির্বাচনে একক সুবিধা নিতে পারবে না। জনগণ আমাকে চাইছে, তাই আমি আশা করি যে দল আমাকে চূড়ান্তভাবে মনোনয়ন দেবে।’