নাটোরের সিংড়ায় শীতের শুরুতেই চলনবিলে বিশেষভাবে তৈরি কিল্লা ঘরের ফাঁদে বক দিয়ে বক শিকারে মেতেছে লোভী পাখি শিকারিরা। আর পাতা সে ফাঁদে পাখি শিকারের সময় হাতে-নাতে আটক করে দুই পেশাদার শিকারিকে ভ্রাম্যমান আদালত দু’মাসের করে কারাদন্ড দিয়েছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৯টায় ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিংড়ার ইউএনও মাজহারুল ইসলাম এ দণ্ডাদেশ দেন।
এর আগে ভোরে প্রশাসনের নির্দেশে সিংড়ার চলনবিলের ইন্দ্রাসন মাঠ থেকে দুই পেশাদার পাখি শিকারিকে আটক করেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পাশবর্তী তাড়াশ থানার পলাশী গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে কবির প্রামাণিক (৪৫) ও একই গ্রামের মরহুম আহসান হাবিবের ছেলে জান মাহমুদ (৩৫)।
অভিযানে বিশেষভাবে তৈরি কিল্লা ঘর ও কারেন্ট জালের ফাঁদ থেকে উদ্ধারকৃত শতাধিক বক, শালিকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি অবমুক্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম ও সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুজ্জামান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ, যুগ্ম সম্পাদক হাসিবুল হাসান শিমুল, পরিবেশ কর্মী এমএ করিম প্রমুখ।
পরে জব্দকৃত ফাঁদগুলো ধ্বংস ও বিলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, বর্ষার শেষে ও শীতের শুরুতে চলনবিলে ধান ক্ষেতে বিশেষভাবে তৈরি ফাঁদ কিল্লা ঘর ও কারেন্টজালে পাখি শিকারে মেতে ওঠে লোভী শিকারিরা। এ বিলের পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তারা দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার ভোরে ইন্দ্রাসন ও মাগুড়া এলাকায় ধান ক্ষেতে পাতা কিল্লা ঘর ও জাল ফাঁদ থেকে ১০৫টি বক ও শালিক পাখি উদ্ধার করে অবমুক্ত করেন। এ সময় দুই কিশোর শিকারিকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় আর দুই পেশাদার পাখি শিকারিকে প্রশাসনের মাধ্যমে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
ইউএনও মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিলের পাখি রক্ষায় চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সদস্যরা খুবই সক্রিয়। পাশাপাশি প্রশাসনও সব সময়ই তৎপর রয়েছে। কোনো অপরাধ সংগঠিত হলেই সেখানে ছুটে যাচ্ছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’



