সিলেটে র‌্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া তানভীর স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মগোপনে ছিলেন!

তাকে রাখা হয় সিলেট শহরতলীর শ্রীরামপুর এলাকায় অবস্থিত র‌্যাব-৯ এর সদর দফতরে। পরদিন রোববার সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
নিহত তানভীর চৌধুরী
নিহত তানভীর চৌধুরী |সংগৃহীত

সিলেটে র‌্যাব-৯-এর হেফাজতে মারা যাওয়া তানভীর চৌধুরী স্ত্রীকে হত্যা করে সিলেটে আত্মগোপন করেছিলেন। তিনি গলায় কম্বল পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, নওগাঁয় আদালতে যাওয়ার পথে স্ত্রীকে হত্যা করে সিলেটে আত্মগোপনে ছিলেন তানভীর চৌধুরী। হত্যার দুই দিন পর শনিবার সন্ধ্যায় তাকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চৈলাখেল নিজপাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তাকে রাখা হয় সিলেট শহরতলীর শ্রীরামপুর এলাকায় অবস্থিত র‌্যাব-৯ এর সদর দফতরে। পরদিন রোববার সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, গলায় কম্বল পেঁচিয়ে ভেন্টিলেটরের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তানভীর গাজীপুর জেলার কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ গ্রামের বাবুল চৌধুরীর ছেলে ও নওগাঁ সদর উপজেলার শালুকা সরকারপাড়ার জ্যোতির স্বামী।

র‌্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ জানান, তানভীর চৌধুরীকে তার স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের আগে তাকে র‌্যাবের হেফাজতে রাখা হয়।

রোববার সকালে আত্মহত্যার বিষয়টি জানার পর পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গায়ে দেয়ার জন্য তাকে দেয়া কম্বল পেঁচিয়ে বাথরুমের ভেন্টিলেটরের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তানভীর।

র‌্যাব জানিয়েছে, জ্যোতি তার প্রথম স্বামীকে নিয়ে গার্মেন্টসে চাকরির সুবাধে গাজীপুরে থাকতেন। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুরে তানভীরের কাপড়ের দোকান ছিল। কাপড় কিনতে গিয়ে সম্পর্কে হয় তানভীর ও জ্যোতির। পরে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে তিনি বিয়ে করেন তানভীরকে।

আগের বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি জানার পর জ্যোতির সাথে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করেন তানভীর। এ ঘটনায় নওগাঁ আদালতে তানভীরের বিরুদ্ধে যৌতুক ও খোরপোষের মামলা করেন জ্যোতি। সেই মামলায় গত বৃহস্পতিবার আদালতে যাওয়ার পথে তানভীরসহ কয়েকজন জ্যোতিকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় তারা জ্যোতিকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় পরদিন তানভীরকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেন জ্যোতির মা। মামলার পর সিলেটে পালিয়ে আসেন তানভীর। র‌্যাব-৫ ও র‌্যাব-৯ যৌথ অভিযান করে তাকে গ্রেফতার করে। কিন্তু নওগাঁ থানায় হস্তান্তরের আগেই আত্মহত্যা করেন তানভীর।