ঝালকাঠিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৬ জনের সদস্যপদ বাতিল

‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ডসহ আইনজীবীদের মারধর, মামলা হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।’

কাজী খলিলুর রহমান, ঝালকাঠি

Location :

Jhalokati
ঝালকাঠিতে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়
ঝালকাঠিতে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয় |নয়া দিগন্ত

ঝালকাঠিতে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামীপন্থী ১৬ জন আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিল করেছে বর্তমান কার্যনির্বাহী পরিষদ।

সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো: নাসিমুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে ১৬ জন আইনজীবীর সদস্যপদ বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তবে কি কারণে বা সমিতির গঠণতন্ত্রের কোন ধারা অনুযায়ী তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে তা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। চিঠিতে শুধু উল্লেখ করা হয়— গত ২২ এপ্রিলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় আপনার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।

সদস্যপদ বাতিল হওয়া আইনজীবীরা হলেন, নিষিদ্ধঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা জজ আদালতের সাবেক পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) আবদুল মান্নান রসুল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মো: মঞ্জুর হোসেন ও তার ছেলে আইনজীবী মো: মোর্শেদ কামাল তালুকদার, সাবেক সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) তপন কুমার রায় চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এডিশনাল (পিপি) এম আলম খান কামাল, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও এডিশনাল পিপি আ.স. ম. মোস্তাফিজুর রহমান (মনু), জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো: মাহাবুবার রহমান তালুকদার, জেলা বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব জি. কে. মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক এপিপি সঞ্জয় কুমার মিত্র, মো: আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, কার্তিক চন্দ্র দত্ত, সৈয়দ মো: জাহাঙ্গীর শামীম, তানজিলা হক, মো: আবুল বাশার ও নিষিদ্ধঘোষিত জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক এস. এম. রুহুল আমীন রিজভী।

সদস্যপদ বাতিল হওয়া কার্তিক চন্দ্র দত্ত বলেন, ‘আমাদের আইনজীবী সমিতি সদস্য পদ অন্যায়ভাবে বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

জেলা আইনজীবী সমিতির ভর্তি বিষয়ক সম্পাদক আক্কাস সিকদার বলেন, ‘শুধু আওয়ামীপন্থী ১৬ জন নয়, আরো বিভিন্ন দলের সমর্থক এবং ইরেগুলার ৩০ জনের সদস্য পদ বাতিল নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে কিন্তু সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়নি। সাধারণ সভা ছাড়া আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটি এভাবে বিপুল সংখ্যক সদস্যদের পদ বাতিল করতে পারে না। এ বিষয়টি সাধারণ সভায় আলোচনার কথা ছিল। তাছাড়া ভিজিলেন্স উপকমিটির মতামত ব্যতীত কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যায় না।’

জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী সদস্য ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনিসুর রহমান খান বলেন, ‘চিঠিতে কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে সদস্য পদ বাতিল করার বিষয়টি যে উল্লেখ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য পদ বাতিলের বিষয়টি সাধারণ সভায় উপস্থাপন করার জন্য মতামত দিয়েছিলাম। ১৬ জন সদস্যের বাতিলের বিষয়টি সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক হয়নি।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও শহর বিএনপির সভাপতি মো: নাসিমুল হাসান বলেন, ‘আমরা জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে উল্লেখিত ১৬ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলাম। কমিটির প্রতিবেদনে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের বিভিন্ন অন্যায় কর্মকাণ্ডসহ আইনজীবীদের মারধর, মামলা হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক তাদের সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।’