চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় উদ্বোধনের পর থেকে ২০ বছর ধরে অচল ট্রমা সেন্টারটি দ্রুত চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকালে এ উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী ট্রমা সেন্টার পরিদর্শন করেছেন।
এসময় তিনি লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ২০০ শয্যায় উন্নিত করার ঘোষণা দেন। পরদির্শনকালে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা: জাহাঙ্গীর আলমও উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শন শেষে সাবেক প্যানেল স্পিকার ও হুইপ শাহজাহান চৌধুরী সাংবাদিকদেও মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে (২০০১-২০০৬) হাটহাজারী ও লোহাগাড়ায় দুইটি ট্রমা সেন্টার স্থাপনের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টারের নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১২ সালে। তবে উদ্বোধনের পরও বিগত সময়ে কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এলাকার মানুষ গুরুত্বপূর্ণ এই সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছে।’
এ সময় তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ল্যাব, বহির্বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ ও কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং চলমান সেবা কার্যক্রমের খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনকালে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে পরিবেশ রক্ষার অংশ হিসেবে গাছের চারা রোপণ করেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটিতে প্রচুর গাড়ি চলাচল করে। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত লোকজন যাতে তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা পান সে জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মাঝামাঝি স্থানে ট্রমা সেন্টারটি নির্মাণ করা হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন তলার হাসপাতাল ভবনে আছে ২০টি শয্যা। তার মধ্যে বিশেষ কেবিন দুটি, সাধারণ শয্যা ১৮টি। হাসপাতাল ভবনে আসবাবপত্র দেয়া হয়েছে। আছে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগও। অব্যবহৃত অব্যবস্থায় নষ্ট হচ্ছে মালামাল। ভবন নির্মাণের পরপরই ওই সেন্টারের জন্য যন্ত্রপাতি ও বেড সরবরাহ করে সরকার। তবে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ট্রমা সেন্টারটি চালু না হওয়ায় মালামালগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের মুখে প্রচলিত আছে ‘এক যুগ ধরে নিজেই পঙ্গু লোহাগাড়া ট্রমা সেন্টার’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ট্রমা সেন্টার চালুর জন্য অবকাঠামোগত সংস্কার, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মেরামত ও জনবল নিয়োগসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউএইচএফপিও ডা: ইকবাল হোসাইন যোগদানের পর থেকে সেন্টারটি চালুর লক্ষে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ট্রমা সেন্টারটি চালু হলে দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি সেবার জন্য আর দূরবর্তী হাসপাতালে যেতে হবে না। এতে লোহাগাড়া ও আশপাশের উপজেলার মানুষ উপকৃত হবেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: ইকবাল হোসাইন, লোহাগাড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, লোহাগাড়া প্রেস ক্লাব সভাপতি এম সাইফুল্লাহ চৌধুরী, আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বটতলী শহর পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক কাজি মাওলানা নুরুল আলম চৌধুরী, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা: জিয়া উদ্দিন আহমেদ, পদুয়া ইউনিয়ন জামায়াতে আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আ ক ম হামিদুল হক, পদুয়া ইউনিয়ন যুব বিভাগের সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, লোহাগাড়া উপজেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক শের আলী, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক নুরুল ইসলাম সিকদারসহ হাসপাতালের সকল চিকিৎসক, স্টাফ, নার্স, কর্মচারিসহ অন্যরা।