বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিপনের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ২৬৯ দিন পর উত্তোলন করতে গেলে পরিবারের বাধার কারণে লাশ উত্তোলন না করে ফিরে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা-উল-হুসনা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বাট্টাজোর ইউনিয়নের পানাতিয়া পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ঢাকা-মহানগর আদালতের নির্দেশে বকশীগঞ্জ ক্ষমতাপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) আসমা-উল- হুসনার উপস্থিতিতে রিপনের লাশ উত্তোলনের জন্য তার পারিবারিক কবরস্থানে যান তদন্তকারী কর্মকর্তা খায়রুল ইসলামসহ কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকা উত্তরা নিহত হন রিপন। পরে নিহত রিপনের বড় ভাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর আসামি করে ঢাকা উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা করেন।
ওই সময় দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিহত রিপনের অভিভাবকরা সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও স্থানীয় পুলিশকে অবগত না করে ভিকটিম রিপনের লাশ ৫ আগস্ট তার গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করে। যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ভিকটিম রিপনের লাশ তোলার জন্য আদালত আদেশ প্রদান করেন।
তারই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে বকশীগঞ্জ উপজেলার পানাতিয়াপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য আসেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি আসমা-উল- হুসনা ও ঢাকা উত্তরা পূর্ব থানার মামলার দায়িত্ব প্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম। এ সময় লাশ উত্তোলনে আপত্তি জানান রিপনের বড় ভাই সরকার আক্তার হোসেন। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট সময় দিয়ে আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলে ফিরে যান।
মামলার বাদি সরকার আক্তার হোসেন জানান, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে সব কাজ সম্পন্ন করে লাশ উত্তোলনের জন্য আসেন। আমরা খবর পেয়ে এখানে এসে আপত্তি জানাই।’
লাশ উত্তোলন করতে যাওয়া বকশীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসমা-উল-হুসনা জানান, ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে আমরা রিপন মিয়ার লাশ উত্তোলন করতে এসেছিলাম। কিন্তু মামলার বাদি আক্তার হোসেন আপত্তি জানান। আমরা বিষয়টি আদালতে অবহিত করব। আদালতের পরবর্তী নির্দেশের পর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
বকশীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, ‘আমরা থানা থেকে সহায়ক টিম হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। কিন্তু মামলার বাদি লাশ উত্তোলনে আপত্তি জানানোয় তদন্তকারী টিম ফিরে যান এবং আমাদের সহায়ক টিমের সদস্যরাও ফিরে আসে।