টিকিট বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ

কক্সবাজার স্টেডিয়ামে দর্শকদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। এতে ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন।

আতিকুর রহমান মানিক, ঈদগাঁও (কক্সবাজার)

Location :

Cox's Bazar
কক্সবাজার স্টেডিয়ামে ভাংচুর
কক্সবাজার স্টেডিয়ামে ভাংচুর |নয়া দিগন্ত

কক্সবাজারে ধারণক্ষমতার বেশি এবং বেশি দামে টিকিট বিক্রি করায় জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। এতে ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজারে জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে টিকিটের নির্ধারিত মূল্য ৫০ টাকা। কিন্তু সেখানে ১০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ১০ থেকে ১৫ হাজার। সেখানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার দর্শক ঢোকানো হয়েছে। এ কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে।

খেলা শুরু হওয়ার আগে ক্ষুব্ধ দর্শকরা স্টেডিয়ামের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরে তাদের বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা স্টেডিয়ামে ঢুকে বিনা টিকিটের দর্শকদের বের করে দিতে চাইলেই বাধে সংঘর্ষ। এ সময় এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

দর্শকদের ছোড়া ইটের আঘাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন চৌধুরীসহ সাংবাদিকরা আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষ শুরু হতেই খেলা বন্ধ হয়ে যায়।

এ সংঘর্ষের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আয়োজক কমিটির অতিরিক্ত লোভ-লালসা ও অনিয়ম-অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন নেটিজেনরা।

জেলা শ্রমিক দল সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার অযোগ্য-অর্থব কমিটির জন্য আজ কক্সবাজার নেগেটিভলি সংবাদ শিরোনাম হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো: ইলিয়াছ খাঁন দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জসিম উদ্দিন ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার বিষয়ে বলেন, ‘খেলা শুরুর নির্ধারিত সময়ের ৪ ঘণ্টা আগেই দর্শকরা মাঠে প্রবেশ করে জায়গা দখল করতে শুরু করেন। স্টেডিয়ামের গেট ভেঙে হাজার হাজার দর্শক একযোগে মাঠে ঢুকে পড়েন। এতে হঠাৎ করেই ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ভিড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে এবং দর্শকদের সাথে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে কথার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। তবে দর্শকের সংখ্যা এতটাই বিপুল ছিল যে স্বাভাবিক উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, ‘জনসমাগম অনুমোদিত সীমার কয়েকগুণ বেশি হয়ে যাওয়ায় এবং মাঠ-গ্যালারি সম্পূর্ণ ভরে ওঠায় পরিস্থিতি দ্রুত অরাজকতায় রূপ নেয়। এত বিপুল সংখ্যক দর্শক নিয়ন্ত্রণ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্যও ছিল একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।’