ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে এক বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী- বিএসএফের বিরুদ্ধে। মহেশপুরের শ্যামকুড় ‘চেয়ারম্যান ঘাট’ এলাকায় এই গুলির ঘটনা ঘটে।
নিহত বাংলাদেশীর নাম নাসির উদ্দীন (৪৬)। তিনি মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার লুৎফর রহমানের ছেলে।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর শহিদুল ইসলাম জানান, গত ১৭ মে সীমান্তের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় নাসির গুলিবিদ্ধ হন। সীমান্ত এলাকায় গেলে ভারতের পাখিউড়া বিএসএফের ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে গুলি করে। পেটে ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নাসির অত্যন্ত গোপনে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৩ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শুক্রবার (৩০ মে) ভোরে তিনি মারা যান।
সীমান্তের গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে শ্যামকুড় গ্রামের নাসির, একই উপজেলার পদ্মপুকুর গ্রামের বর্ডার রিপন ও অনন্তপুর গ্রামের সোহাগ ভারত সীমান্তে গেলে পাখিউড়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছোড়ে। গুলিতে নাসিরসহ তার দুই সহযোগী আহত হন। বিষয়টি গোপন রেখে গুলিবিদ্ধরা গোপনে চিকিৎসা নেন। অন্য দু’জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও নাসির মারা যান।
নিহত নাসিরের প্রতিবেশি শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহানুর বলেন, ‘নাসির মারা গেছেন এটা সত্য, তবে কিভাবে মারা গেছেন তা তিনি জানি না।’
স্থানীয় গ্রামপুলিশ ফেরদৌস খান জানান, নাসিরের মৃত্যুর খবর শুনে তিনি তার বাড়িতে যান। কিন্তু বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে এমন কথা পরিবারের কেউ স্বীকার করছে না। বিষয়টি তারা গোপন রাখতে চাচ্ছে। তবে প্রতিবেশীদের অনেকেই বিএসএফের গুলিতে মারা যাওয়ার কথা বলছে।
এ বিষয়ে মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল রফিকুল আলম বলেন, এমন কথা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে বিজিবি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু বিএসএফ গুলি করেছে এমন কথা পরিবারের কেউ স্বীকার বা অভিযোগও দেয়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ এপ্রিল বাঘাডাঙ্গা গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ওয়াসিম ও ২৭ এপ্রিল একই উপজেলার গোপালপুর গ্রামের হানিফ আলীর ছেলে ওবাইদুর রহমান বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও বিএসএফ দুই বাংলাদেশীর লাশ এখনো ফেরত দেয়নি। তবে বিজিবি সূত্রগুলো বলছে, নিহত দুই বাংলাদেশীর লাশ বিএসএফ ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ কারণে লাশ ফেরত পেতে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।