যশোরে ইজিবাইক মালিকের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে বাড়িতে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই বাড়িতে গিয়ে ইজিবাইক মালিক নারীর শ্লীলতাহানি করে মারধর করাসহ শিশু সন্তানের গলায় ছুরি ধরে হুমকি দেয়া হয়।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে যশোর প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন জেসমিন বেগম নামে শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকারোড এলাকার ওই নারী।
লিখিত বক্তব্যে ওই ভুক্তভোগী জানান, তার চারটি ইজিবাইক রয়েছে, যা ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে তার ব্যবসার দিকে নজর পড়ে ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বারান্দীপাড়া বৌ বাজার এলাকার তারেক হাসান চুন্নার। কিছুদিন পর চুন্না জেসমিনের কাছে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় চুন্না ও তার সহযোগীরা বারবার জেসমিনকে হুমকি দিতে থাকে। গত ৪ আগস্ট বিকেলে তারেক হাসান চুন্নাসহ তার সহযোগী জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, বিশাল, আকাশ, লাল্টু, সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শফিক, হাসান, সানু, মন্ডল, তুষার, আল আমিনসহ আরো ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেসমিনের বাড়িতে হামলা চালায়।
ভুক্তভোগী আরো বলেন, এ সময় তার ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। পরে টাকা না দেয়ায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং সানু ও লাল্টু জেসমিনের শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় চুন্না ঘর তল্লাশি করে জেসমিনের ব্যবসার ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। জেসমিনের ২০ বছরের ছেলে রাকিব হাসানকে মারধর করে আহত করার পাশাপাশি ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় চাকু ধরে অবশিষ্ট টাকা দিতে বলে। পরে জেসমিনের পরিবারের ডাক-চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে অনেকে পালিয়ে যায়। তবে চুন্নাসহ কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে স্থানীয়রা। পরে কিছু দুর্বৃত্ত এসে চাকুর ভয় দেখিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নেয়।
এদিকে কিছু সময় পর চুন্নার নেতৃত্বে আরো ৩০-৪০ জন আবারো জেসমিনের বাড়িতে হাজির হয়। এ সময় ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে তারা। পরে জেসমিন ৯৯৯- এ কল করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এছাড়া সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মোবাইলফোনটি উদ্ধার করা হয়।
তবে ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী। পরে বাধ্য হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করছেন বলে জানিয়েছেন।
সম্মেলনে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। এ সময় জেসমিনের ছেলে রাকিব, মেয়ে সাদিয়া, রুমা, মুরাদ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’