ভৈরবে পরকিয়ায় জড়িয়ে নিজের দেড় বছরের শিশু সন্তান নুসরাতকে গলাটিপে হত্যা করার অভিযোগ ওঠেছে মা আয়েশা বেগমের(২৫) বিরুদ্ধে। পরে অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (৮ জুন) দুপুরে শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে।
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে শহরের লক্ষীপুর এলাকায়। অভিযুক্ত আয়েশার স্বামী ওমর ফারুকের বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার নিলক্ষা গ্রামে। সে জুতা কারখারার শ্রমিক। এই দম্পত্তির আলিফ নামে সাড়ে তিন বছরের আরেকটি ছেলে আছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে শিশুর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সন্তানকে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন মা আয়েশা।
পুলিশ ও তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেলাব উপজেলার নিলক্ষা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ওমর ফারুক পাঁচ বছর আগে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের মেয়ে আয়েশা বেগমকে বিয়ে করে। স্বামী ওমর ফারুক ভৈরবের একটি পাদুকা কারখানায় শ্রমিকের কাজ করত। তারই সহকর্মী ছিল পাদুকা কারখানার শ্রমিক মো: আলমগীর। এই সুবাদে আলমগীর বন্ধু ওমর ফারুকের বাসায় যাতায়াত করত। এই সুযোগে তার স্ত্রী আয়েশা স্বামীর সহকর্মী বন্ধু আলমগীরের পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরে গত দেড়মাস আগে স্বামীকে না জানিয়ে আয়েশা তার বড় সন্তান আলিফকে স্বামীর বাড়ি রেখে ছোট সন্তান নুসরাতকে কোলে নিয়ে আলমগীরের সাথে পালিয়ে ভৈরব শহরে শাহিন কবিরের বাসা ভাড়া করে গোপনে বসবাস করতে থাকে। এঘটনার পর স্বামীসহ তার পরিবার দেড়মাস ধরে খোঁজেও তাকে পায়নি। এরই মধ্য স্বামী ওমর ফারুক বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। শনিবার রাতে ভৈরব থানা পুলিশ আয়েশার শ্বশুর আবুল কালামকে ফোনে ঘটনাটি অবহিত করলে রাতেই তিনি অপর নাতিকে নিয়ে থানায় উপস্থিত হন।
আয়েশার শ্বশুর আবুল কালাম জানান, গতকাল রাত ১১টার ঘটনার খবর পেয়ে বড় নাতি আলিফকে নিয়ে ভৈরব থানায় আসি। বাড়ি থেকে দেড়মাস আগে আয়েশা কোলের শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্ত পাইনি। তার বাবার বাড়িতে যোগাযোগ করলে বাবা মান্নান মিয়া বলেছেন- মেয়ে তার বাড়িতে আছে।
তিনি বলেন ঘটনার পর আমার ছেলেও নিখোঁজ রয়েছে। পুত্রবধূর এমন ঘটনায় তিনি হতবাক হয়েছেন। এঘটনায় আয়েশাসহ তার পরকিয়া প্রেমিক আলমগীরের কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফূয়াদ রুহানী এবিষয়ে জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে ঘটনার খবর পেয়ে শহরের লক্ষীপুর এলাকার শাহিন কবিরের মালিকানাধীন ভাড়া বাসা থেকে শিশুটির লাশ পুলিশ উদ্ধার করে। এসময় মা আয়েশাকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি পরকিয়ার কারণে ঘটেছে। হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে মা। শিশুটির ময়নাতদন্ত করার জন্য কিশোরগঞ্জ পাঠানো হয় লাশ। এ ঘটনায় থানায় আয়েশার শ্বশুর আবুল কালামের মামলার প্রস্ততি চলছে। পরে মামলাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।