বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান

বিগত সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে

ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি প্রদান এবং এমপিওভুক্তির জন্য প্রণীত নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান। সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ওমর আলী বাবু, জয়পুরহাট

Location :

Joypurhat S
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান |নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা মো: নুরুল হক বলেছেন, ‘বিগত সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে।’

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ২০২৫ সালের আলিম পরীক্ষা সুষ্ঠু-নকলমুক্ত পরিবেশে আয়োজনের লক্ষে জয়পুরহাট সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার সেমিনার রুমে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় জয়পুরহাট-১ কেন্দ্রের আওতাধীন মাদ্রাসাসমূহের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, অধ্যক্ষ ও সুপাররা অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মো: আব্দুল মতিন, অধ্যক্ষ, জয়পুরহাট সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- হানাইল নোমানিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: আব্দুল হাকিম এবং কড়ই নুরুল হুদা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: আব্দুর রহমান সরকার সহ জেলার বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষকরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মিঞা মো: নুরুল হক বলেন, ‘বিগত সরকার দেশের পরীক্ষা পদ্ধতি ও ফলাফল প্রণয়নের স্বচ্ছতা নষ্ট করেছে। আমরা সেই ধ্বংসস্তুপ থেকে বেরিয়ে এসে একটি মানসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এখন থেকে পাবলিক পরীক্ষার খাতায় শিক্ষার্থীরা যা লিখবে, শিক্ষকরা তা-ই দেখে নম্বর প্রদান করবেন। অতিরিক্ত নম্বর প্রদান বা কমিয়ে দেয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আমাদের লক্ষ গুণগতমানসম্পন্ন জনশক্তি তৈরি—শুধু সংখ্যাগত বৃদ্ধি নয়।’

চেয়ারম্যান মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে বোর্ডের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘ইবতেদায়ি ও সিনিয়র মাদরাসাগুলোর জন্য নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যে প্রতিষ্ঠানগুলো এতদিন অবহেলিত ছিল, তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন করা হবে।’

তিনি আরো জানান, ‘ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন প্রথা বিলুপ্ত করে সরাসরি নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন চালুর চিন্তাভাবনা করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।’

ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি প্রদান এবং এমপিওভুক্তির জন্য প্রণীত নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান। সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে একটি মাত্র মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিএমটিটিআই) রয়েছে। এখানে একজন শিক্ষক একটি প্রশিক্ষণ নেয়ার পরে পুনরায় প্রশিক্ষণ নিতে ৩৮ বছর সময় লাগতে পারে, তাও নিশ্চয়তা নেই। এই সংকট দূর করতে আমাদের পরিকল্পনা, প্রতিটি বিভাগে একটি করে বিএমটিএফ বিএমটিটিআই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।’

সভা শেষে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা মতবিনিময়ে অংশ নেন এবং পরীক্ষার মানোন্নয়ন ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।