নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হওয়া মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাইমুর রহমান দুর্জয়ের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুর সোয়া তিনটার দিকে দুর্জয়কে মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই শামীম আল-মামুন তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতে দুর্জয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম বাদশা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির।
এর আগে, বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার লালমাটিয়া এলাকার নিজ বাসভবন থেকে দুর্জয়কে গ্রেফতার করে মানিকগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের অধীনে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন মো: সাদিকুল ইসলাম রাব্বি।
পুলিশ জানায়, মানিকগঞ্জ সদর ও দৌলতপুর থানায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় দুর্জয় এজাহারনামীয় আসামি। এর মধ্যে ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ সদর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় (মামলা নম্বর ৫) তাকে ১৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা মো: সাদিকুল ইসলাম রাব্বি। ওই মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯০৮-এর ৩(ক) ধারার পাশাপাশি দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ৩২৩, ৩২৬, ৩০৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
একই দিন দৌলতপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় (মামলা নম্বর ১) দুর্জয়কে প্রধান আসামি করা হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ও ৪ ধারাসহ দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩২৪, ৩২৬, ৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
এদিকে, আজ আদালতে দুর্জয়কে হাজির করার সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবী ও দলীয় নেতাকর্মীরা দুর্জয়ের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। এ সময় দুর্জয়ের দিকে ডিম নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে।
নাইমুর রহমান দুর্জয় ২০০১ সালে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। দলটির মনোনয়নে তিনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ-বাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ২৪ অক্টোবর দুর্জয় ও তার স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার একটি আদালত।