ডিজি ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট

কৃষিতে ফলন বিপর্যয় রোধে আবহাওয়ার পূর্বাভাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

ব্রি উদ্ভাবিত জলবায়ু সহিষ্ণু বিভিন্ন ধানের জাত লবণাক্ততা, খরা, জলাবদ্ধতাসহ নানা ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মোহাম্মদ আলী ঝিলন, গাজীপুর

Location :

Gazipur
ব্রির কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ব্রির কর্মশালা অনুষ্ঠিত |নয়া দিগন্ত

গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেছেন, ‘কৃষিতে ফলন বিপর্যয় রোধে আবহাওয়ার পূর্বাভাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জলবায়ূজনিত বিরূপ প্রভাবে প্রতিবছরই আমাদের কৃষিতে নানা রকম ক্ষতিকর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। সম্প্রতি এর মাত্রা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের আশংকা ভবিষ্যতে এ প্রভাব আরো বৃদ্ধি পাবে। যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে। তাই কৃষির এ ক্ষতি মোকাবেলায় আমাদের অন্যতম সমাধান হতে পারে সঠিক সময় আবহাওয়ার আগাম সতর্ক বার্তা। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠানের ট্রেনিং কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস-ভিত্তিক কৃষি পরামর্শ প্রচারে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি বিজ্ঞানী থেকে কৃষক পর্যায়ে এ সংক্রান্ত নানা তথ্য পৌঁছে দিতে গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকা আশা করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘ব্রি এ পর্যন্ত ১২১টি ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছে, যার মধ্যে ৩৬টি প্রতিকূল জলবায়ু সহিষ্ণু জাত, এ ধান আমাদের নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। চোরাই পথে অনেক ধরণের বীজধান দেশে প্রবেশ করে। এগুলোর বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এ বীজধানের সাথে ক্ষতিকর রোগজীবাণু ও ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। যা আমাদের সামগ্রিক উৎপাদন ব্যবস্থায় সমস্য সৃষ্টি করতে পারে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রির পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাগ্রোমেট ল্যাবের ল্যাবরেটরি কো-অর্ডিনেটর ড. এ বি এম জাহিদ হোসেন। সভাপতিত্ব করেন পরিচালক (গবেষণা) ও ল্যাবরেটরি চীফ ড. মো: রফিকুল ইসলাম। কর্মশালাটি সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রির ঊর্ধ্বতন যোগাযোগ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমিন। এছাড়া কর্মশালায় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিচালক (গবেষণা) ও ল্যাবরেটরি চীফ ড. মো: রফিকুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘কারখানা বর্জ্যের কারণে আমাদের মাটির স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে। কারখানা মালিকরা খরচ বাঁচাতে ইটিপি বন্ধ করে রাখে। অথচ সঠিক ট্রিটমেন্টের মাধ্যেমে কারখানার এ বর্জ্য ভালো মানের সারে রূপান্তরিত হতে পারে। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষাও আমাদের কৃষিউৎপাদন বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গরুত্বপূর্ণ।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা জানায়, ব্রি উদ্ভাবিত জলবায়ু সহিষ্ণু বিভিন্ন ধানের জাত লবণাক্ততা, খরা, জলাবদ্ধতাসহ নানা ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ব্রি এ পর্যন্ত ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করে। ইতোমধ্যে ব্রি উন্নত ২২টি ধানের জাত বিদেশে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন পেয়েছে, যা দেশের গবেষণা সক্ষমতার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

কৃষকদের সরাসরি সেবা দিতে ব্রি কলসেন্টার ০৯৬ ৪৪৩ ০০৩০০ চালু করেছে, যেখানে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কৃষকরা আবহাওয়াজনিত, কীটব্যাধি, জাত নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ পাচ্ছেন।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এন টি ভি ও আমার দেশ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার নাসির আহমেদ, সাবেক সভাপতি ও ইত্তেফাকের প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি ও জনকণ্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, কালের কণ্ঠের শামীম আহমেদ, দৈনিক দিনকালের দেলোয়ার হোসেন, দৈনিক সংগ্রামের স্টাফ রিপোর্টার মো: রেজাউল বারী বাবুল, দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি মো: আমিনুল ইসলাম, প্রথম আলোর মো: মাসুদ রানা, প্রতিদিনের সংবাদ প্রতিনিধি হাসমত আলী, দৈনিক নয়া দিগন্তের শেখ মো: আজিজুল হক, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক মাহমুদা শিকদার প্রমুখ।