মেয়েকে বাঁচাতে বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিকের আকুতি, চেয়েছেন সহায়তা

‘বিল থেকে শাক সংগ্রহ করে সেই টাকায় কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে সংসার চলছিল। এর মধ্যে হঠাৎ মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় টাকার অভাবে তাকে চিকিৎসাও করাতে পারছি না। সকলের সহযোগিতা চাই।’

শেখ দীন মাহমুদ, পাইকগাছা (খুলনা)

Location :

Paikgachha
মেয়েকে বাঁচাতে বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিকের আকুতি, চেয়েছেন সহায়তা
মেয়েকে বাঁচাতে বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিকের আকুতি, চেয়েছেন সহায়তা |নয়া দিগন্ত

খুলনা পাইকগাছার বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিক গাজী (৬৯)। দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী হলেও ১৯৮৫ সাল থেকেই খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ আশপাশের কয়েক জেলায় পায়ে হেঁটে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিতরণ করেছেন বকুলের চারা। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি চারা রোপণ করেছেন তিনি। এমন কর্মকাণ্ডে এলাকায় বকুল সিদ্দিক নামেই সবাই চেনেন তাকে।

স্ত্রী সন্তানসহ বর্তমানে দারিদ্রতাও যেন তার নিত্য সঙ্গী। বিল থেকে নানা পদের শাক সংগ্রহ করে কপিলমুনি বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে তা বিক্রি করেন সিদ্দিক। আর বিক্রির সেই টাকায় জীবন চলে তার। উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের মরহুম বেলায়েত গাজীর ছেলে তিনি।

কয়েকদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে তার মেয়ে খাঁদিজা। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া খাঁদিজাকে ডাক্তারের কাছে নিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। ফলে অপারেশনের কথা জানায় ডাক্তাররা। অপারেশন ও ওষুধের খরচ বাবদ প্রায় ১৫ হাজার টাকার কথা জানানো হয় হাসপাতাল থেকে। টাকার অঙ্কটি সামান্য হলেও যেন এক কাঁধ বোঝা হয়ে উঠেছে হতদরিদ্র সিদ্দিকের কাছে।

মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি। সমাজের বিত্তবানদের কাছে চেয়েছেন সহযোগিতা। সহযোগিতা করতে ও খোঁজ নিতে ০১৯৫৬৬৩৯৭৬৭ (নগদ ও বিকাশ পার্সোনাল) নম্বরে যোগাযোগের কথা জানিয়েছেন সিদ্দিক।

বৃক্ষপ্রেমিক সিদ্দিক গাজী বলেন, ‘বিল থেকে শাক সংগ্রহ করে সেই টাকায় কোনো রকম খেয়ে না খেয়ে সংসার চলছিল। এর মধ্যে হঠাৎ মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় টাকার অভাবে তাকে চিকিৎসাও করাতে পারছি না। সকলের সহযোগিতা চাই।’

উল্লেখ্য, হতদরিদ্র সিদ্দিকের এ বকুল রোপণ কর্মকাণ্ডে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বকুল গাছ নিয়ে বিটিভি’র জনপ্রিয় ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করা হয়। পরে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারও দেয়া হয় অনুষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। সেই অর্থও মানবতার কল্যাণে বৃক্ষ রোপণে ব্যয় করেন সিদ্দিক।