পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মহিলাসহ ১০জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের শান্তিরবাজার গুদারাঘাট ও মসলেন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় হামলাকারীরা বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। আহতদের সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা যায়, উপজেলার বারদী ইউনিয়নের মান্দারপাড়া গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে মো: ডালিম মিয়া একই গ্রামের ওয়াদুদ বেপারীর ছেলে নুর মোহাম্মদ ওরফে নুরা পাগলাকে চার মাস আগে পিকআপ ভ্যান কেনার জন্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা ধার দেন। টাকা ধার নেয়ার পর থেকে ডালিমের সাথে নুর মোহাম্মদ দেখা করেন না। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বারদীর শান্তিরবাজার গুদারাঘাট এলাকায় ডালিমের সাথে নুর মোহাম্মদের দেখা হয়। ওই সময়ে তার কাছে টাকা ফেরত চান ডালিম। এ নিয়ে নুর মোহাম্মদের সাথে ডালিমের তর্ক-বিতর্ক হয়।
এক পর্যায়ে উভয়ে মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে নুর মোহাম্মদ ডালিমকে ধাওয়া করে তার গ্যারেজে নিয়ে যায়। ডালিম ধাওয়া খেয়ে আত্মরক্ষার জন্য গ্যারেজে দরজা লাগিয়ে দেয়। এসময় নুর মোহাম্মদের সমর্থকরা এসে সেই গ্যারেজের দরজা, জানালা কুপিয়ে নষ্ট করে। তারা দ্বিতীয় দফায় মসলেন্দপুর গ্রামে নুর মোহাম্মদ ও হাবিবুর রহমান হাবুর নেতৃত্বে শফিকুল ইসলাম, ফালাইন্না, আশিক, সুমন মিয়া, মোরছালিন, সৈকত মিয়া ও রিপন মিয়া লাঠিসোটা, দা, বল্লম, হকিস্টিক ও চাপাতি নিয়ে ডালিমের বাড়িতে গিয়ে হামলা করে।
হামলাকারীরা শালিম, আব্দুল হাই, ওয়াসকুরুনী, রিনা বেগম, জয়নাল আবেদিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। হামলার সময় ডালিমের লোকজন প্রতিরোধ গড়ে তুলে নুর মোহাম্মদের সমর্থক শরীফ ও জনু মিয়া, রিপন মিয়াকে আহত করে। এক পর্যায়ে নুর মোহাম্মদের সমর্থক ডালিমের বাড়িঘর ভাংচুর চালায়। পরে তারা ডালিমের বাড়ি থেকে দুটি গরু, একটি ছাগল, চারটি ভেড়া ও বাড়ির আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ডালিমের চাচাতো ভাই আহত আব্দুল হাই সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত ডালিম মিয়া জানান, নুর মোহাম্মদের কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় তাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরে ধাওয়া করে না পেয়ে গ্যারেজ ভাংচুর চালায়। নুর মোহাম্মদ ও হাবুর নেতৃত্বে তাদের বাড়িতে গিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে তারা গরু, ছাগল, ভেড়া ও আসবাপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তাদের আটজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে।
অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তর্ক-বিতর্কের জেরে তার লোকজনের ওপর হামলা করে তিনজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত আহত করা হয়। তবে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা তারা ঘটাননি। তার লোকজনকে আহত করার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেবেন।
সোনারগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান খান জানান, হামলা ও ভাংচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানের পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একপক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।