বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, ‘মাদক, কিশোর গ্যাং এটা এখন সমাজের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর সমস্যা। গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রের সকল কাঠামোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এর ফলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটেছিল।’
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জে বসবাসকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জে একটি রেস্টুরেন্টে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ৩৮ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
আগামী দিনে কেমন নারায়ণগঞ্জ দেখতে চাই এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন এবং মতামত তুলে ধরেন।
বিএনপি আগামী দিনে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে শিক্ষার্থীদের এসব ভাবনা কিভাবে সমন্বয় করা হবে সে বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরেন অধ্যাপক মামুন মাহমুদ।
শিক্ষার্থীরা নারায়ণগঞ্জে মাদকের ভয়াবহতা, পরিবেশ দূষণ, কিশোর গ্যাংয়ের নৃশংসতার বিষয়ে তাদের উদ্বেগ তুলে ধরেন। তারা জানতে চান আগামী দিনে অপরাধীরা রাজনৈতিক আশ্রয় পাবে কি-না ? নারায়ণগঞ্জ ধনী জেলা হওয়ায় অনেকেরই পড়াশোনায় আগ্রহ কম। আবার অনেক দরিদ্র পরিবার রয়েছে যাদের সন্তানদের শিক্ষার খরচ যোগান দেয়া অনেক কঠিন। যার ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই নগন্য। এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় এ বিষয়ে তারা কথা বলেন। এছাড়া খেলার মাঠের অভাব এবং সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার কোন সুযোগ এখানে নেই বলে শিক্ষার্থীর মনে করেন।
অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল নানা কারণে এখনো ফিরে আসেনি। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে আগামী দিনে কিভাবে বৈষম্যহীন, মানবিক মর্যাদা সম্পন্ন, ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ঘরে তুলা হবে তার একটি রূপরেখা ৩১ দফায় তুলে ধরা হয়েছে। এসব অপরাধ নির্মূলে বিএনপি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। কোনো অপরাধীকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয় বিএনপি দেয় না এবং দিবেও না। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের সাথে জড়িত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধেই বিএনপি কঠোর শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছে। গত এক বছরে দল থেকে বহিষ্কার হয়েছে কয়েক হাজার। নারায়ণগঞ্জেও শাস্তির আওতায় এসেছে বেশ কয়েকজন। অতএব কোন অপরাধীর স্থান বিএনপিতে হবে না।’
খেলার মাঠের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খেলার মাঠ এবং সরকারি জায়গাগুলো দখল হয়ে গেছে। বিএনপি নির্বাচিত হলে সিদ্ধিরগঞ্জে তার প্রথম কাজ হবে এসব পুনরুদ্ধার এবং প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ করা। পাঠাগার নির্মাণ করা।’
প্রতিটি উপজেলায় একটি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাছাই করে সেখানে দরিদ্র অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে ফ্রি কোচিংয়ের ব্যবস্থা এখন থেকেই শুরু করার কথা বলেন তিনি। এজন্য ঢাবি শিক্ষার্থীদের তিনি উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন। সেক্ষেত্রে তিনি সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।