আশুগঞ্জে হিন্দু বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই, সহায়তায় এগিয়ে এলেন জামায়াত নেতা

জেলা আমির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুবারক হোসাইন বলেন, ‘মানুষের বিপদের সময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাশে দাঁড়ানো আমাদের নবীর (সা.) শিক্ষা। মানবিক নেতা জামায়াত আমির ডাক্তার শফিকুর রহমান আমাদেরকে এ ব্যাপারে সাধ্যমত ভূমিকা রাখতে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

Location :

Ashuganj
হিন্দু বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই, এগিয়ে এলেন জামায়াত নেতা
হিন্দু বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই, এগিয়ে এলেন জামায়াত নেতা |নয়া দিগন্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে এক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিবারটির প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ফলে ঘরের পাঁচটি কক্ষের আসবাবপত্র, রক্ষিত নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে পরিবারটি প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে মানবিক সহায়তায় নিয়ে ছুটে এলেন জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুবারক হোসাইন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর ১টার দিকে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর গ্রামের হিন্দু পরিবার শ্রীনিবাস দাসের বাড়িতে আগুন লেগে তার বসতঘরের পাঁচটি কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ঘরে চিকিৎসার জন্য রক্ষিত নগদ পাঁচ লাখ টাকা, মূল্যবান আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। ফলে আগুনে পুড়ে পরিবারটির প্রায় ২০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়া আগুনে পুরে নারী ও শিশুসহ দুইজন আহত হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে রান্না ঘরে থাকা দুটি এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়ে আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পরে। এসময় আগুনের লেলিহান শিখায় চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টায় প্রায় দেড় ঘন্টা পর আগুন নেভানো সম্ভব হলেও ততক্ষণে পুরো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তবে ফায়ার সার্ভিসের প্রচেষ্টার ফলে আগুন পার্শ্ববর্তী বাড়িতে ছড়াতে পারেনি।

পুরে যাওয়া বাড়ির মালিক শ্রীনিবাস দাস জানান, হঠাৎ আগুন ছড়িয়ে পড়ার কারণে তার পরিবারের কেউ পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই নিয়ে বের হতে পরেনি। এরই মধ্যে তার এক পুত্রবধূ ও এক শিশু নাতি পুড়ে আহত হয়। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, তিনি হার্টের রোগী। তার চিকিৎসা করতে ঢাকা যাবার জন্য এনজিও সংস্থা থেকে ঋণ করে নগদ পাঁচ লাখ টাকা ঘরে রেখেছিলেন- যা আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মানবিক সহায়তায় নিয়ে ছুটে এলেন জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুবারক হোসাইন। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেন। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন- আশুগঞ্জ উপজেলা জামায়তের আমির শাহজাহান ভূঁইয়া, জেলা জামায়াতের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নাইমুর রহমান ও লালপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মনির হোসাইন প্রমুখ।

এসময় জেলা আমির অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুবারক হোসাইন বলেন, ‘মানুষের বিপদের সময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পাশে দাঁড়ানো আমাদের নবীর (সা.) শিক্ষা। মানবিক নেতা আমিরে জামায়াত ডাক্তার শফিকুর রহমান আমাদেরকে এ ব্যাপারে সাধ্যমত ভূমিকা রাখতে নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন।’

তিনি স্থানীয় প্রশাসন ও বিত্তবানদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।