সিলেটে নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে দেড় শতাধিক বছরের সাংবাদিকতার স্মারক প্রতিষ্ঠান সিলেট প্রেসক্লাব সদস্যদের ‘মেম্বারস ফ্যামিলি ডে-২০২৫’। কয়েক বছর পর এই আয়োজন ক্লাবের নবীন ও প্রবীণ সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মিলনমেলায় রূপ নেয়।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমাস্থ কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে দিনব্যাপি ওই মিলনমেলায় অতিথি হিসেবে যোগ দেন সিলেটের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদের মধ্যে ছিলেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, জামায়াত মনোনীত প্রার্থী, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল মালিক (এমএ মালিক), সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো: রেজা-উন-নবী, সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত এসপি সম্রাট হোসেন প্রমুখ।
সাংবাদিকদের পরিবারের মিলনমেলায় যোগ দিয়ে সিলেট-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, ‘সিলেটের সাংবাদিকতার ইতিহাস অনেক সমৃদ্ধ। কিছু কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এই অঞ্চলে বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতার চর্চা লক্ষ্য করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘সিলেট প্রেসক্লাব সদস্যরা পেশাগত ব্যস্ততার মাঝে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফ্যামিলি ডে’র আজকের যে আয়োজন করেছে তাতে থাকতে পেরে ভালো লাগছে।’
সব সময় সাংবাদিকদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন তিনি।
সিলেট-১ আসনে জামায়াত ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দেড় শতবছরের সাংবাদিকতার স্মারক প্রতিষ্ঠান সিলেট প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে আমার পুরনো সম্পর্ক। এখানে বহু গুণী সাংবাদিকের জন্ম হয়েছে। যুগ যুগ ধরে এই ক্লাব তার ঐতিহ্য ধারণ করে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে কাজ করছেন। আমি সবার সমৃদ্ধি কামনা করছি।’
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত সিলেট প্রেসক্লাব সদস্য এটিএম তুরাবকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়।
দিনব্যাপি আয়োজনের শেষ দিকে সন্ধ্যায় একই ভেন্যুতে সিলেট প্রেসক্লাব-মাহা অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো রেজা-উন-নবী।
তিনি বলেন, ‘সততা, নৈতিকতা ও পেশাদারিত্বকে সমুন্নত রেখে সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটি মর্যাদাপূর্ণ পেশা। একজন সাংবাদিক কাজের মাধ্যমে নিজেকে শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে তৈরি করতে পারেন। সততা, নৈতিকতা ও পেশাদারিত্বকে সমুন্নত রেখে সাংবাদিকতাকে এগিয়ে নিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আগের চেয়ে সাংবাদিকতার পরিধি বেড়েছে। এই বিশাল পরিধিতে সাংবাদিকদের অবদান রাখার বিশাল সুযোগ রয়েছে। সারা পৃথিবীতে ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার বহু সাংবাদিক তাদের কর্মের মধ্য দিয়ে জগৎশ্রেষ্ঠ সাংবাদিকে পরিণত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতা করতে ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশে অনেক সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে সিলেটেও সাংবাদিক এটিএম তুরাব প্রাণ হারিয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রফেশনালিজম তৈরি করেই সত্যিকারের প্রফেশনাল হতে হবে। তবেই, দেশ, জাতি ও সমাজ এগিয়ে যাবে। অনেক বিদগ্ধ মানুষ, সমাজের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ থেকে বিভিন্ন স্তরের লোকজন এই পেশায় সমবেত হয়েছেন। এমন পরিবেশে থাকতে পেরে আমার আনন্দ লাগছে।’
পরে ক্লাবের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক শেখ আব্দুল মজিদের সঞ্চালনায় পুরস্কারপ্রাপ্ত ১৫ সাংবাদিকের হাতে সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়।
শেষ দিকে মেম্বারস ফ্যামিলি ডে উপলক্ষে ক্রীড়া ইভেন্টর পুরস্কার ও সদস্যদের মাঝে ফ্যামিলি ডে’র গিফট বিতরণ করা হয়।
সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় ফ্যামিলি ডে অনুষ্ঠানে ক্লাব সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুকতাবিস উন নূর, মুহাম্মদ ফয়জুর রহমান, আব্দুল মালিক জাকা, জিয়াউস শামস শাহীন, এনামুল হক জুবের, বদরুদ্দোজা বদর, আব্দুস সবুর মাখন, মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, মো: আফতাব উদ্দিন, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, মো: মুহিবুর রহমান, চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, মো: ফয়ছল আলম, মো: আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, কবির আহমদ সোহেল, আহমাদ সেলিম, আনাস হাবিব কলিন্স, কামাল উদ্দিন আহমেদ, আনিস রহমান, কবির আহমদ, এম আহমদ আলী, ফারুক আহমদ, সোয়েব বাসিত, এম এ মতিন, আশকার আমিন ইবনে লস্কর রাব্বি, জাবেদ আহমদ, মঞ্জুর আহমদ, কামকামুর রাজ্জাক রুনু, আহবাব মোস্তফা খান, ফয়সাল আমীন, আহমদ মারুফ, ইউনুছ চৌধুরী, শাহ মো: কয়েছ আহমদ, আবু সাঈদ মো: নোমান, মো: বদরুর রহমান বাবর, দিগেন সিংহ, এম এ হান্নান, সিন্টু রঞ্জন চন্দ, শেখ আশরাফুল আলম নাসির, গোলজার আহমদ, শুয়াইবুল ইসলাম, নৌসাদ আহমদ চৌধুরী, খালেদ আহমদ, এনামুল হক রেনু, মানাউবি সিংহ শুভ, শেখ আব্দুল মজিদ, মোহাম্মদ নাহিদ রহমান, শ্যামানন্দ দাশ, মো: আব্দুর রাজ্জাক, মো: দুলাল হোসেন, মো: মারুফ হাসান, দিপক বৈদ্য দিপু, শুভ্র দাস, ফয়ছল আহমদ, লুৎফুর রহমান তোফায়েল, রেজাউল হক, একে কাওছার, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী শিপার, শফিক আহমদ শফি, খাদিজা বুশরা নুর, সাকিব আহমদ মিঠু, শাকিলা আক্তার (ববি), মামুন পারভেজ, সেলিম আউয়াল, ফায়যুর রহমান, এইচএম শহীদুল ইসলাম, ইফতেখার মো: নাবিল, এমজেএইচ নাবিল, লবীব আহমদ, মো: জুনেদ আহমদ, অপু বনিক, মো: সেলিম মিয়া ও নয়ন সরকার প্রমুখ।
সহযোগী সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-আকাশ চৌধুরী, মাসরুর রাসেল, সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভান, রত্মা আহমদ তামান্না, হুমায়ুন কবির লিটন ও শিপন আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বশির উদ্দিন, এসএমপি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সাইফুল ইসলাম ও জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সম্রাট তালুকদার, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সদস্য আহমদ শামীম, ফ্রান্স প্রবাসী সাংবাদিক শাহ সুহেল ও সৌদি আরব প্রবাসী আব্দুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন।



