বাবুগঞ্জে নদী ভাঙনে বিলীন ঘরবাড়ি, হুমকির মুখে বিদ্যালয়সহ আরো অর্ধশতাধিক বাড়ি

রাতের গভীরে ১ ঘণ্টার ব্যবধানে চারটি বসতঘরসহ বেশ কিছু স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া নদীর এ আকস্মিক ভাঙনের ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদসহ শতাধিক বাড়িঘর।

মো: রফিকুল ইসলাম, বাবুগঞ্জ (বরিশাল)

Location :

Barishal
নদীতে বিলীন বসতভিটা
নদীতে বিলীন বসতভিটা |নয়া দিগন্ত

বরিশালের বাবুগঞ্জে সন্ধ্যা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙন তীব্র হয়েছে। এতে রাতের গভীরে ১ ঘণ্টার ব্যবধানে চারটি বসতঘরসহ বেশ কিছু স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া নদীর এ আকস্মিক ভাঙনের ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে একাধিক বিদ্যালয় ও জামে মসজিদসহ শতাধিক বাড়িঘর।

গত কয়েক দিনে বাবুগঞ্জের সন্ধ্যা, সুগন্ধা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় এ ভাঙন বেড়েছে। এতে আতঙ্কে রয়েছে উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরহোগল পাতিয়া গ্রামসহ বেশ কয়েক গ্রামের মানুষ।

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা যায়, উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ চরহোগল পাতিয়া গ্রামে আকস্মিক নদী ভাঙনে চারটি পরিবারের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে।

ভুক্তভোগীরা জানায়, শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার সন্ধ্যা নদীর আকস্মিক ভাঙনে বসতিগুলো বিলীন হয়ে যায়। এ সময় নদী পাড়ের গাছপালাও নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এছাড়া ওই এলাকার সবুজ বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ চরহোগল পাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় জামে মসজিদ, ভাঙ্গারমুখ লঞ্চঘাটসহ ২৫টি বসতঘর চরম হুমকির মুখ রয়েছে।

ভুক্তভোগী মজিদ বেপারি জানান, ‘স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে কোনোরকম দিন কাটছিল। কিন্তু সন্ধ্যা নদী এক নিমিষেই সবকিছু শেষ দিল আমাদের। ভিটে-মাটিটুকু কেড়ে নিয়ে আমাদের পথে বসিয়ে দিল। এখন সন্তানদের নিয়ে আমরা কোথায় যাব?’

ভুক্তভোগী আজিজ বেপারি জানান, ‘রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করে গাছপালা ও ঘরবাড়ি দেবে যাচ্ছিল। সরানোর কোনো সুযোগ আমরা পাইনি।’

ওই এলাকার নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ করে ঝুপঝাপ করে শব্দ শুনতে পাই। দেখে মনে হলো এখানে ২০০ হাত পানি হয়ে গেছে। তারপর অনেক জায়গা নিয়ে বসে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো কোনো মালামাল সরানোর সুযোগ পায়নি।’

এদিকে সন্ধ্যা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়া ভুক্তভোগী চার পরিবারের মজিদ বেপারি, আজিদ বেপারি, সালেক বেপারি ও বারেক বেপারি সরকারের প্রতিনিধিদের কাছে সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান খান হিমু বলেন, ‘সন্ধ্যা নদীর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে ওই এলাকার দুটি বিদ্যালয়সহ অনেক বসতবাড়ি। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রতি ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে জোড়ালো দাবি জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। ওই এলাকার চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করা হবে ও পানি উন্নয়ন বোডের্র সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’