মাদরাসার সামনে থেকে ডাস্টবিন সরিয়ে নেয়ার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বাদ জুমা টঙ্গী চেরাগ আলী হিমার দীঘি এলাকায় দারুল উলুম মাদরাসার সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ এলাকাবাসী বক্তব্য রাখেন।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, এই মাদরাসায় ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। এ ছাড়াও অর্ধশত শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছে। এর পেছনে আবাসিক এলাকা। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৬নং ওয়ার্ডের ডাস্টবিনটি মাদরাসাসহ জনবহুল এলাকার দক্ষিণে থাকার কারণে ময়লা পচে দুর্গন্ধ বাতাসে মাদরাসা ও আশপাশ এলাকার পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হচ্ছে। এতে মাদরাসার শিক্ষার্থী ছাড়াও আশেপাশের আবাসিক এলাকায় দুর্গন্ধযুক্ত বাতাস ছড়িয়ে পড়ায় বসবাসরত সাধারণ মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। অসুস্থ হয় পড়ছে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।
মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, এই প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর অর্ধশত কোরআনে হাফেজ ছাড়াও শত শত শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ধর্মীয় শিক্ষাদান করছে এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। এই ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে গত ১০ বছর পূর্বে এই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রভাব খাটিয়ে এবং এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করার লক্ষ্যে মাদরাসার সামনে এনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন ডাস্টবিন বানান। এরপর থেকে ৪৬নং ওয়ার্ডসহ আশেপাশের ওয়ার্ডের সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা হয়। বাসা বাড়ি ও রাস্তা ঘাটের ময়লা পচে অসহনীয় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এই দুর্গন্ধে মাদরাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ছাড়াও এলাকাবাসীর নানান প্রকার অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত সৃষ্টিসহ নানানভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দিন দিন কমে যাচ্ছে এই মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ ছাড়াও মাদরাসার সামনে এ এলাকার একটি ঈদগাহ ময়দান রয়েছে। এ ময়দানে এলাকার হাজার হাজার মুসল্লির উপস্থিতিতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ঈদগাহ ময়দানের সামনে ময়লার ডাস্টবিন থাকায় ঈদের জামাতে আগত মুসল্লিরা দুর্গন্ধের কারণে অনেকেই এই ময়দানে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন। মাদরাসায় সামনে এ মাঠটিতে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও আশেপাশের শিশুরা খেলাধুলা করতে পারছে না।
এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান বলেন, সাবেক ৪৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মাদরাসার সামনে ডাস্টবিন না বসানোর জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও এখানে ডাস্টবিন বানিয়েছে। মেহেদী হাসানের মতো মাদরাসার মসজিদে নামাজ পড়তে আসা ও এলাকাবাসী একই বক্তব্য দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মাদরাসা মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, মাদরাসার সামনে থেকে এই ডাস্টবিনটি সরানোর জন্য সাবেক কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম নুরুকে ও সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অনুরোধ করেছিলাম। তারা আমাদের কোনো কথাই গুরুত্ব রাখেননি।
মাদরাসার অধ্যক্ষ মাসুউদুল করিম বলেন, বিগত সরকারের সর্বোচ্চ মহলে গিয়েও এ বিষয়ে কোনো সুরাহা করতে পারিনি। গত ৫ আগস্টের পর বর্তমান সিটি করপোরেশনের সর্বোচ্চ কর্তা ব্যক্তিদের কাছে একাধিকবার লিখিত দেয়ার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। টঙ্গীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মাদরাসার শিক্ষার্থীদের রক্ষার্থে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এই ডাস্টবিনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।