জাতীয় নাগরিক পাটি এনসিপির কেন্দ্রীয় মূখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিনাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমরা জুলাই সনদ প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকেই নিতে চাই, অন্য কারো কাছ থেকে নয়।’
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে এনসিপির পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানের নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পরবর্তী বাংলাদেশের নেতৃত্ব এনসিপিই দেবে। জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে অনেকে এখন লুকিয়ে কান্না করছে।’
‘আমরা খেলতে আসি নাই। খেলার নিয়ম পাল্টাতে এসেছি’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে যতই চেষ্টা করুক কেউ আর আওয়ামী লীগ হতে পারবে না। বাংলাদেশে এখন সময় এসেছে আওয়ামী লীগকে না বলার।‘
হাসনাত আবদুল্লাাহ বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এনসিপি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির হাতকে শক্তিশালী করবে। যারা বাংলাদেশকে ধারণ করবে, যারা ভারতীয় আগ্রাসনকে প্রতিরোধ করবে এবং সম্প্রীতি নিয়ে কাজ করবে তেমন সৎ ও যোগ্য লোকদের নিয়ে এনসিপি গড়ে উঠবে।’
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এনসিপির একটাই কোরাম হবে, সেটি হলো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কোরাম। এখানে ব্যক্তি কেন্দ্রীক কোনো কোরাম হবে না। কারণ, মাইম্যান পলিটিক্স অব্যাহত থাকলে পতন নিশ্চিত। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।’
এনসিপি রাঙ্গামাটির প্রধান সমন্বয়ক বিপিন জ্যোতি চাকমার সভাপতিত্বে স্থানীয় জিমনেসিয়ামে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সমন্বয়ক মহিবুল আলম, এনসিপি বিভাগীয় সমন্বয়ক এ এস এম সুজাউদ্দিন, এনসিপির পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক তত্ত্বাবধায়ক ইমন সোহেল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক জুবায়ের আলম আরিফ, এনসিপি দক্ষিণাঞ্চল সমন্বয়ক ও খাগড়াছড়ির প্রধান সমন্বয়ক মনজিলা ঝুমা, এনসিপি বান্দরবান জেলার প্রধান সমন্বয়ক শহিদুর রহমান সোহেল, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাজমুল হক, কেন্দ্রীয় শ্রমিক শক্তির যুগ্ম আহ্বায়ক কলিন চাকমা প্রমুখ।
এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বিএনপির উদ্দেশ্য বলেন, ‘গুলি খেতে না চাইলে এবং অনিয়ম ঘুষ দুর্নীতি থেকে বাঁচতে চাইলে এনসিপিতে চলে আসুন আমরা আপনাদেরকে সম্মান দেবো।’
তিনি বলেন, ‘যারা বিগত বছরগুলোতে অন্যায় নির্যাতন জুলুমের স্বীকার হয়েছে তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে। বিএনপি জামায়াতে যদি নিরাপদ মনে না করেন তাহলে এনসিপিতে ফিরে আসুন। এনসিপির জন্ম রাজপথে। তাই আগামীতে যাই কিছুই আসুক তা রাজপথে সমাধান হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আগামী ১০ বছর পর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে এনসিপি। আগামী দশবছরের মধ্যে এনসিপি সরকার গঠন করবে। যারা এখন ব্যালটের প্রস্তুতি না নিয়ে বুলেটের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদেরকে বাংলাদেশের জনগণ সঠিক সময়ে ব্যালটের মাধ্যমে এর জবাব দেবে। অস্ত্রের রাজনীতি, চাঁদাবাজির রাজনীতিতে মানুষ অতিষ্ঠ। আগামীর ভোট হবে মাফিয়া, চাঁদাবাজ ও বুলেটের বিরুদ্ধে। যারা ব্যালটের চেয়ে বুলেটকে শক্তিশালী করেছে তাদের বিচার হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যারা বাংলাদেশ পন্থা, যারা সৎ মানুষ তাদেরকে এনসিপির দাওয়াত দিতে হবে। যারা জুলাই আন্দোলনে বিরোধীতা করেনি, যারা অপরাধী নয়, যারা বাংলাদেশকে ভালবাসে তাদের সাথে নিয়ে এনসিপির হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। এনসিপি এবং এর সহযোগী সংগঠনে যার যে সাংগঠনিক কাজ তা আন্তরিকভাবে পালন করতে হবে।’
সমন্বয় সভায় তিন পার্বত্য জেলার সাংগঠনিক বিষয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।



