ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে ছামির খান (২৫) নামে এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তবে স্বজনদের অভিযোগ, থানায় আটকাবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এবং এতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে তিনি কারাগারে অসুস্থ হলে কারা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে ভর্তি রাখা হয়।
কারাগারের জেল সুপার মো: ওবায়দুর রহমহান জানান, আশুগঞ্জ থানার দরজীসার গ্রামের বাসিন্দা ছামির খান বিজয়নগর থানার এক মামলার আসামি ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনি কারাগারে অসুস্থতা অনুভব করলে কারা হাসপাতালে তার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে ভর্তি রাখা হয়। শুক্রবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরো জানান, সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেয়া মৃত্যুর সনদে ‘জ্বর ও শীতজনিত জটিলতায় হৃদযন্ত্র ও শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যর্থ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে ছামিরের মা মনোয়ারা বেগম ও স্ত্রী সাথী আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিজয়নগর থানার এসআই মাহবুব আলম সরকার গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে ছামিরকে পিটিয়ে আহত করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করেন। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারাগারে দেখা করতে গেলে ছামির নিজেই তাদের এ কথা জানান।
তারা বলেন, জেলখানায় তার শরীরের সর্বত্র ব্যথা করত, কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা হয়নি।
গত ২০ জুন বিজয়নগরের টানমনিপুর এলাকায় কচুরিপানা থেকে মজিবুর রহমান নামে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটনের দাবি করে। ওই ঘটনায় নিহত মজিবুর রহমানের স্ত্রী বিলকিছ আক্তার অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে বিজয়নগর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পরদিন ২১ জুন ছামির খানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করলে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।