ফেনী শহরের বিরিঞ্চিতে পেট্টোল ঢেলে দুই শিশুকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ২৫ মাস পর মামলার মূল আসামির নাম বেরিয়ে আসে। এরপর অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেন জনিকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার বিকেলে পুলিশ সুপার মো: হাবিবুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর বিরিঞ্চি এলাকার পচি ফকির বাড়িতে সম্পত্তি-সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সহিদুল ইসলামের বসতঘরে রাতের অন্ধকারে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে পুড়ে সহিদুল ইসলামের দুই শিশু সন্তান মাহিদুল ইসলাম শাহাদাত (১৩) ও তানজিদুল ইসলাম গোলাপের (৬) মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সহিদুল ইসলাম ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, মামলার তদন্তকালে ঘটনার সাথে জড়িত কিছু আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটির তদন্ত ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু মামলার মূল আসামি কামাল হোসেন জনি মামলার ঘটনার পর পালিয়ে যান। তিনি গ্রেফতার এড়ানোর জন্য ‘কাসিম’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মগোপনে থাকেন। এমনকি নিজের নামেও কোনো ধরনের সিম ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। তার পরিবারের সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে বিভিন্ন মানুষের মোবাইল থেকে সরাসরি মোবাইলে কল না দিয়ে অন্যভাবে যোগাযোগ করতেন। তিন দিন টানা অভিযান চালিয়ে ডিবির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টিম নিয়ে চট্টগ্রামের সদরঘাট থানার মাদারবাড়ি এলাকা থেকে ৪ নভেম্বর দুপুরে তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জনি মামলার ঘটনা-সংক্রান্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন এবং ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারীসহ অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়।
পুলিশকে দেয়া জনির ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন জনি নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে রাত ১টার দিকে অপর তিনজন ব্যক্তি সরাসরি আগুন দেই বলেন জানান। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার মাস্টারমাইন্ড ও দুস্কৃতিকারীদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাছাড়া ঘটনার তিন-চার দিন আগে আসামিরা ঘটনা বাস্তবায়নে একটি বাগানে পরিকল্পনা করে।
তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সুপার নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মর্ম সিংহ মারমা জানান, জনিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।



