কুমিল্লার চান্দিনায় চারতলা ভবনের ছাদ থেকে ফেলে কেয়ারটেকার সোহেল হত্যার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো মামলা হয়নি। জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের টনক নড়লেও, নিহতের পরিবারকে মামলা করতে বাধ্য করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মাত্র। এলাকাবাসীর বিস্ময়, এমন স্পষ্ট হত্যাকাণ্ডের পরও কেন এতদিন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি?
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে ইসলাম ট্রেডার্সের মালিক শিহাবের চারতলা ভবনের ছাদে প্রেমিক যুগল আহাদ ও ফেরদৌসীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন কর্মচারী সোহেল। ভিডিও ধারণের সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয় তাকে। এরপর সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহেলের মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবার জানায়, অভিভাবকহীন অবস্থায় তাদের ভুল বুঝিয়ে ময়নাতদন্ত পর্যন্ত করা হয়নি। মামলার পরিবর্তে ভবনের মালিক শিহাব প্রলোভন দেখিয়ে মামলা না করার পরামর্শ দেন। সোহেলের নির্মাণাধীন ঘর সম্পূর্ণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি এবং পরিবারের দেখভালের আশ্বাস দিয়ে মামলা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেন তিনি।
সোহেলের মা সালেহা বেগম ও স্ত্রী রোজিনা জানান, সোহেলকে যেভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, ঠিক সেভাবেই হত্যাকারীদের শাস্তি চান তারা।
তবে সোহেলের চাচা জসিম দাবি করেন, মামলা চালানোর খরচ ও হয়রানির আশঙ্কায় পরিবার চুপ ছিল।
শিহাবের বাসার একাধিক ভাড়াটিয়া জানায়, সোহেল শুধু গরুর ফার্ম নয়, বাসার ভাড়া আদায় ও ভাড়াটিয়াদের দেখভালের দায়িত্বও পালন করতেন।
শিহাব অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিজেই পুলিশ ডেকে এনেছেন এবং পরিবারকে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন পুলিশ পাঠানো হয়, কিন্তু পরিবার লিখিতভাবে জানায় তাদের কোনো অভিযোগ নেই। ফলে মামলা নেয়া হয়নি।
চান্দিনা ও দাউদকান্দি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) তানভীর ফয়সাল বলেন, পরিবার মামলা দিতে রাজি নয় এবং ময়নাতদন্তও করেনি।
শিহাবের প্রলোভনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই, তবে সঠিক তথ্য পেলে সিনিয়র অফিসারদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।