পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে কোরবানি ঈদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৩ হাজার পশু। খামারিরা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতে পারবেন বলে জানা গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন হাটে পশুগুলো বিক্রির জন্য নেয়া হচ্ছে। পশু লালন-পালনে কিছুটা কষ্টসাধ্য হওয়ায় আবার কেউ কেউ খামার থেকেই ক্রয় করে নিচ্ছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় অনেকে দুই থেকে তিন মাস বা ছয় মাস আগে গবাদিপশু লালনপালন শুরু করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় ৭৮৬ খামারি ও ব্যক্তি মালিকানাসহ মোট ৩৫ হাজার পশু রয়েছে। এর মধ্যে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে কোরবানিযোগ্য ষাঁড় আছে হাজার ৬৭৫, বলদ এক হাজার ৯৯৪, গাভি চার হাজার ৭২, মহিষ ১১৭, ছাগল দুই হাজার ৫১৫ ও ভেড়া ২৪টিসহ মোট প্রস্তুত রয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৭টি পশু।
এ বছর উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১১ হাজার ২৫৬টি। ইতোমধ্যেই এসব পর্যায়ক্রমে পশুগুলো বিক্রির জন্য উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে তোলা হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী দাম মিলে গেলে বিক্রিও করা হচ্ছে। উপজেলার বাইরের ব্যাপারীরাও খামার থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। চাহিদার অতিরিক্ত পশুগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য পাঠানো হবে। সবমিলিয়ে এ উপজেলায় কোরবানির পশুর কোনো সঙ্কট হবে না। দেশীয় পশুতেই কোরবানি সম্পন্ন করতে পারবেন উপজেলাবাসী এমনটা প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার রোধে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খামারি ও পশু পালনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক বার্তা।
সরেজমিনে উপজেলা সদর সুবিদখালী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ঈদকে সামনে রেখে খামারি ও গৃহস্থ এবং ব্যাপারীরা গরু, মহিষ, ও ছাগল বেচাকেনা করছেন। আবার কেউ দেখেশুনে কোরবানির জন্য পশু ক্রয় করবেন।
জানা গেছে, এ উপজেলায় স্থায়ী হাট রয়েছে চারটি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে স্থায়ী হাটসহ আরো তিনটি পশুর হাট বসবে। এসব হাটে কোরবানিযোগ্য পশুগুলো বিক্রির জন্য তোলা হবে। ইতোমধ্যেই কিছু কিছু হাটে পশু বিক্রি শুরু হয়েছে। মাইকে প্রচারণা চালাচ্ছে অস্থায়ী হাটের ইজারাদাররা।
উপজেলার কাফুলা এলাকার মাহাবুব এগ্রোর মালিক মো: মাহাবুব বলেন, ‘আমার খামারে কোরবানির জন্য ১০টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব পশু দেশীয় উপায়ে প্রস্তুত করা হয়েছে।’
মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: আলাউদ্দিন মাসুদ জানান, উপজেলার খামারগুলোয় কোরবানির ঈদের জন্য পালিত পশুর প্রায় সবই দেশীয় জাতের। চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলার চাহিদার অতিরিক্ত কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাবে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ থেকে খামারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে পালিত পশুর প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হয়।