নওগাঁয় বাড়ছে মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ, লাভবান কৃষকরা

উত্তরের জেলা নওগাঁর সবজি ভাণ্ডার খ্যাত উপজেলা বদলগাছীর কৃষিতে লেগেছে আজ আধুনিকতার ছোঁয়া। প্রযুক্তির এই ছোঁয়ায় উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ।

নয়া দিগন্ত অনলাইন

Location :

Badalgachhi
মালচিং পদ্ধতিতে মরিচের চাষ
মালচিং পদ্ধতিতে মরিচের চাষ |নয়া দিগন্ত

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। দীর্ঘসময় ধরে ফলন পাওয়া এবং সারা বছর বাজারে চাহিদা থাকার কারণে এ পদ্ধতি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে এভাবে উৎপাদিত মরিচ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে।

উত্তরের জেলা নওগাঁর সবজি ভাণ্ডার খ্যাত উপজেলা বদলগাছীর কৃষিতে লেগেছে আজ আধুনিকতার ছোঁয়া। প্রযুক্তির এই ছোঁয়া থেকে বাদ পড়েনি উপজেলার কৃষি ব্যবস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় এই উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ।

স্থানীয় কৃষি বিভাগের মতে, চলতি মওসুমে উপজেলার মথুরাপুর ইউপির নহেলা কাষ্টগাড়ী এলাকায় বেশ কয়েকজন কৃষক মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। এছাড়াও পাহাড়পুর, মিঠাপুর, আধাইপুর, কোলা বিলাশবাড়ী সহ ৮টি ইউনিয়নে প্রচুর জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করা হচ্ছে।

মালচিং পদ্ধতিতে শুরুতে একসাথে কিছুটা খরচ বেশি হলেও পরে খরচ কমে যায়। এ পদ্ধতিতে জমিতে আগাছা হয় না। ফলে কৃষকদের আগাছা পরিষ্কারের ঝামেলাও নেই। চাষাবাদের শুরুতে সার দেয়ার প্রয়োজন হলেও ফসল তোলার পূর্বে আর সার দিতে হয় না। ফলে কৃষকদের খরচ ও ঝামেলা কম হয়। গাছও দীর্ঘদিন বেঁচে থকে ও ফলন দেয়।

কৃষকরা জানান, এ পদ্ধতিতে জমি তৈরির জন্য মাঝখানে দুই পাশ থেকে কেটে দেড় ফুট চওড়া করে ও ৮-১২ ইঞ্চি পরিমাণ উঁচু করে মাটির সাথে সার মিশিয়ে বেড তৈরি করা হয়। তৈরি বেডগুলো মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়। মালচিং পেপারের কালো রঙের দিকটা থাকে নিচের দিকে আর রুপালি রঙের দিকটা থাকে ওপরের দিকে অর্থাৎ সূর্যের দিকে। এ পদ্ধতিতে সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে মাটিকে রাখে ফসলের উপযোগী। পরে মালচিং পেপারের দুই পাশে নির্দিষ্ট দূরত্বে গোল গোল করে কেটে নেয়া হয়। এরপর কেটে নেয়া জায়গায় রোপণ করা হয় বীজ বা চারা। পরে তিন ফুট উঁচুতে বাঁশ ও সুতা দিয়ে তৈরি করা হয় মাচা।

এ পদ্ধতিতে প্রতি বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করতে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা আর এক বিঘায় উৎপাদিত মরিচ বাজারে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। কাঁচা মরিচের কাঁচা টাকায় ভাগ্যবদলের স্বপ্ন বুনছেন এ উপজেলার মালচিং পদ্ধতির মরিচ চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাবাব ফারহান জানান, বদলগাছি উপজেলার কৃষকরা এখন মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে ভালো সফলতা অর্জন করছেন। এ পদ্ধতি পুরো উজেলার কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে অর্থনীতির চাকা ঘুরে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন কৃষিবিদরা।