চিড়িয়াখানায় প্রাণীগুলোর প্রতি অমানবিক আচরণ করা হয় উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘জাতীয় চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব বা বিনোদনের মানদণ্ড ভাবা উচিত হবে না। চিড়িয়াখানা দেশের বিশেষ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে পারে।’
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘চিড়িয়াখানা এখন যে সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে তার সমাধান কোনো একক ব্যক্তি বা পরিচালক একা চাইলে করা সম্ভব নয়। কারণ এ সমস্যা বহু বছর ধরে চলে আসছে। তাই অধিদফতর, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আজ অনেক পরামর্শ পাওয়া গেছে যা নিজেরা মিটিং করলে হতো না। আমরা আগামীতে এমন একটি কমিটি করবো যেখানে সব শ্রেণির অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে প্রতি মাসে সবাই বসে চিড়িয়াখানার উন্নয়নে কী কী করা যায় তা নির্ধারণ করা হবে।’
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘চিড়িয়াখানার প্রাণীদের সংরক্ষণ পরিকল্পনা শুধু চিড়িয়াখানার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা ঠিক নয়। কোন কোন প্রাণীকে উপযুক্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে স্থানান্তর করা যায় কি না সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। এছাড়া যেসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে সেগুলোকে চিড়িয়াখানায় রাখব কি না বা অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হবে কি না—সেই বিষয়েও আলাপ-আলোচনা প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সঙ্কট প্রাণীগুলোকে যেভাবে রাখার দরকার তা আমরা করতে পারছি না। এর বড় কারণ পর্যাপ্ত জনবলের অভাব। আজকের এ কর্মশালা থেকে যে প্রস্তাবগুলো আসবে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো: আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো: বয়জার রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন চিড়িয়াখানার সাবেক কিউরেটর ডা. এ বি এম শহীদ উল্লাহ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।



