বঙ্গোপসাগরে অবৈধ ফিশিং ট্রলার চলাচল বন্ধ ও সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষার দাবিতে কুয়াকাটায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন স্থানীয় জেলে ও ব্যবসায়ীরা।
রোববার (২৭ জুলাই) সকাল ১০টায় কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট এলাকায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কুয়াকাটা, আলিপুর ও মহিপুর মৎস্যবন্দরের পাঁচ শতাধিক জেলে অংশ নেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গভীর সমুদ্রে অনুমোদনবিহীন শক্তিশালী ট্রলার দিয়ে নির্বিচারে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এতে একদিকে স্থানীয় জেলেরা ন্যায্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন হুমকির মুখে পড়েছে। অবৈধ ট্রলারের জালে ডিমওয়ালা মাছসহ কিশোর মাছ নির্বিচারে শিকার হওয়ায় ভবিষ্যতের মাছের মজুত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের শঙ্কাও বাড়ছে।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও (মে-জুলাই প্রজনন মৌসুমে) অসাধু ব্যবসায়ীদের মালিকানাধীন বড় ট্রলিং বোট সমুদ্রে মাছ শিকার চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা বলেন, ‘আমরা ছোট নৌকা নিয়ে সাগরে যাই, কিন্তু আগের মতো মাছ পাই না। বড় ট্রলারগুলো সব মাছ তুলে নিচ্ছে। ঋণ করে জাল-নৌকা কিনেছি, এখন লোকসান সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসন ও কোস্টগার্ডের আরো কঠোর নজরদারি দাবি করেন এবং বলেন, ‘অবিলম্বে অবৈধ ফিশিং ট্রলার বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে।’
স্থানীয় জেলে সংগঠনগুলোর মতে, এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হলে কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের সমুদ্রভাণ্ডার প্রায় শূন্য হয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ‘ট্রলিংয়ে নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরায় আমরা বোট মালিকদের নোটিশ দিয়েছি। ইতোমধ্যেই তিনটি বোট জব্দ করে মামলা করা হয়েছে। তবে বোট মালিকরা সমুদ্রে মাছ ধরার অনুমতি চেয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেছেন। সেই রিটের কারণে আপাতত ট্রলিং বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।’
‘তারপরও আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সচেতনতা সৃষ্টির জন্য মাইকিং করেছি, নানা সভা ও সেমিনারের আয়োজন করেছি। আশাকরি খুব শিগগিরই রিট আবেদন নিষ্পত্তি হবে। এরপর পুরোদমে ট্রলিং বন্ধে অভিযান শুরু করা হবে।’