পটুয়াখালীতে জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো: রিমানুল ইসলাম রিমুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে রিজভীর সামনে কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় শুয়ে অনশন করেছেন নেতাকর্মীরা।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলার কাজিরহাট বাজারে এ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর গাড়ি কাজিরহাট ব্রিজে পৌঁছালে নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে কাফনের কাপড় পরে শুয়ে পড়েন। প্রায় আধঘণ্টা তারা সড়কে অবস্থান নেন।
জানা গেছে, এক অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা দিতে সকালে পটুয়াখালী আসেন রুহুল কবির রিজভী। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা ও উপজেলা যুবদলের একাংশ সড়কে জড়ো হয়ে বহিষ্কৃত নেতা রিমুর পুনর্বহালের দাবিতে এ অভিনব কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
জানা যায়, রিমানুল ইসলাম রিমুকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর একটি ঘটনার জেরে জেলা যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সে সময় জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে রিমুর সমর্থকরা দাবি করেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত।
স্থানীয় যুবদল নেতারা জানান, রিমানুল ইসলাম রিমু ২০০৭ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে বিএনপির মাঠবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। দক্ষিণাঞ্চলে বিএনপির একাধিক মিছিল, সমাবেশ এবং সাংগঠনিক কাজে তার ভূমিকা রয়েছে। সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচন ঘিরে সাংগঠনিক প্রস্তুতিতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন বলে দাবি নেতাকর্মীদের।
পটুয়াখালী সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ আন্দোলনকালে কালের কন্ঠকে বলেন, ‘রিমু ভাই না থাকলে দলে যখন দুঃসময়, তখন পটুয়াখালীতে বিএনপির কোনো মিছিল-সমাবেশ হতো না। তিনি ১৭ বছর ধরে রাজপথে ছিলেন। কঠিন সময়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এমন একজন ত্যাগী নেতাকে বহিষ্কারাদেশ দিয়ে দূরে রাখা ঠিক হয়নি। আমরা তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই।’
যুবদল নেতা সগির হোসাইন বলেন, ‘রিমু ভাই আমাদের অনেকের রাজনীতির প্রেরণা। তার মতো মানুষের জায়গা দলেই হওয়া উচিত। আমরা আশা করি কেন্দ্রীয় যুবদল সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করবে।’
অবস্থান কর্মসূচিতে শতাধিক নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল। তারা ‘ত্যাগী নেতার বহিষ্কার চলবে না’, ‘রিমুকে ফিরিয়ে আনো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। কর্মসূচি ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আমি একটি মানবিক কাজে এসেছি, দলের কোনো বিষয় দেখতে আসিনি। তারপরও আপনারা বলেছেন, বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
তার আশ্বাসের পর নেতাকর্মীরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান এবং ব্রিজে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।



