কোরবানির ঈদ শেষ হলেও সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে স্তূপ হয়ে পড়ে আছে শত শত কাঁচা চামড়া। কোনো পাইকারি ক্রেতা না আসায় এসব চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এতে আড়ৎদাররা পড়েছেন চরম বিপাকে, সঠিক সময়ে বিক্রি করতে না পারলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
উপজেলার চান্দাইকোনা বাজার চামড়া ব্যবসায়ী সোহাগ, শহিদুল ইসলাম, হাজী তাজ মহল, হাজী বাবুল জানান, ঈদের সময় প্রতি পিস কাঁচা চামড়া কিনেছি প্রকারভেদে ৪০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এ ছাড়া রয়েছে শ্রমিক মজুরি, লবণ, পরিবহন ও আড়ৎ খরচ। কিন্তু বাজারে স্থবিরতা ও সিন্ডিকেটের কারণে এখনো চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। প্রতিবছর ঈদের পর দু-একদিনের মধ্যেই পাইকাররা এসে চামড়া কিনে নিয়ে যেতেন। এবার ঈদ চলে যাওয়ার অনেক দিন হলেও এখনো কেউ আসেনি কাঁচা চামড়া কিনতে। চামড়া গুদামে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা অর্থিকভাবে চরম ক্ষতির অশঙ্কা করছি।
তারা আরো জানান, সরকার যে রেটে চামড়া কিনতে বলেছে, সেই দামে কোম্পানি নিচ্ছে না। এজন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রেটে চামড়া কেনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই রেটে সরকারকে কিনতে বলেন। সরকারের প্রতি অনুরোধ- আমরা যাতে নির্ধারিত মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে পারি।
সিরাজগঞ্জ রোড এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী সুবাস দাস, হাজী আমিনুল ইসলাম, সাকাওয়াত হোসেন সাবু, মহির উদ্দিন জানান, ঈদে চামড়া কিনেছি অনেক কিন্তু নেয়ার লোক নেই। কিছু ছাগলের চামড়া কিনেছিলাম, দাম না থাকায় ও পাইকাররা না নেয়ায় তা আবার ফেলে দিয়েছি।
তারা বলেন, লবনের মূল্য বৃদ্ধি ও চামড়ায় পর্যাপ্ত পরিমাণ লবন দিতে না পারায় অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। সরকারের নির্ধারিত মূল্যে যদি কোম্পানি চামড়া নেয়, তাহলে ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখবে। নির্ধারিত মূল্যে চামড়া না নিলে ব্যবসায়ীদের লসের আশঙ্কা রয়েছে। কোম্পানির কাছে চামড়া বিক্রি করতে গেলে বাছাই করে এ গ্রেডের চামড়া শুধু নেয়। বাকি চামড়াগুলো লস দিয়ে বিক্রি করতে হয়। কোম্পানির কাছে চামড়া বিক্রি করলে, তাও আবার বিক্রি করতে হয় বাকিতে।
সিরাজগঞ্জ চামড়া ব্যবসায়ী কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলেও সেই চামড়া বিক্রি করতে পারছি না। ফলে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। চামড়া বাজারে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এখান থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন বয়বসায়ীরা।
রায়গঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমির হামজা বলেন, উপজেলাতে গত বছর থেকে এ বছর কোরবানির পশু দিগুণ প্রস্তুত ছিল। এ বছর ১৯ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীরা যেন তাদের ক্রয়কৃত চামড়া সঠিকভাবে বিক্রি করতে পারেন, সে বিষয়ে আমরা সচেষ্ট ছিলাম।