ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় প্রতিপক্ষের চার বাগানের তিন হাজার কলাগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরের দিন দু’পক্ষেরে মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে গুরুতর আহত দু’জন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জানিয়েছে পক্ষ দুটি।
গত ২৭ জুন মুক্তাগাছা উপজেলার দাওগাঁও ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগে জানা যায়, বালিয়াপাড়া গ্রামের মরহুম ছমির হাজীর চার ছেলের মধ্যে ঈমান মন্ডল ও দানেছ মন্ডলের বংশধরদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। ঘটনায় উভয় পক্ষ পারিবারিকভাবে গত ২০ জুন জমির ভাগবাটোয়ারার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ২২ জুন ভূমি জরিপকারী এনে উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে সবার অংশ নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে ধানেছ মন্ডলের বংশধর আব্দুল মান্নানের ছেলে দাওগাঁও ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি সাদ্দাম গং গত ২৭ জুন ঈমান মন্ডলের বংশধর কাজিম উদ্দিনদের অংশের ৪ একর জমির কলাবাগান নিজেদের দাবি করেন। পরে ওই বাগানের সকল গাছ কেটে ফেলেন। ঘটনায় পরদিন উভয়পক্ষের মাঝে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। এরমধ্যে গুরুতর আহত দু’জন ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, গাছগুলোর গোড়া থেকে দুই থেকে তিন ফুট উপরে কাটা। গাছের মাথা ও অপরিপক্ব কলার ছড়ি, থোরগুলো (মোচা) ক্ষেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কাজিম উদ্দিন জানায়, এ জমি আমাদের বাপ-দাদার। দীর্ঘদিন যাবত আমরা আবাদ করে খাচ্ছি। প্রতিবেশী আব্দুল মান্নানের হুকুমে যুবলীগ নেতা সাদ্দাম গং দা, কোড়াল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের কলাবাগান কেটে ফেলে ও কলার ছড়ি নিয়ে যায়। ১৫ লাখ টাকার কলা বিক্রি করতাম আমরা। প্রাণের ভয়ে তাদের বাধা দেইনি। বিচারের জন্য থানায় অভিযোগ দিলে তারা আমাদের উপর হামলা করে। এ সময় ১০ জন আহত হন। তারমধ্যে দু’জন এখনো ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সাদ্দাম জানান, উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা এ জায়গার মালিক। তারা ৬০ বছর ধরে আমাদের জায়গা ভোগ-দখল করছে। কিছুদিন আগেই পারিবারিকভাবে বসে জমি মেপে বিষয়টির সুরাহা করা হয়। আমাদের জায়গায় আমরা চাষাবাদ করতেই কলাগাছ কেটে ফেলি। গত ২৮ জুন আমার বাবা আব্দুল মান্নানকে কাজিম উদ্দিন গং আটকে রাখে। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। তখন আমিসহ আরো ১০ জন আহত হয়। পরে মুক্তাগাছা থানায় বিচার চেয়ে অভিযোগ করি।
তিনি আরো জানান, বিগত সময় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ছিলাম। আমি কখনোই কারো ক্ষতি করি নাই। আমার নামে কোনো মামলাও নেই। প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ জানান, এ ঘটনার উভয়পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।