ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি বিএনপির

যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবহেলা মানে জনগণের জীবনের সঙ্গে ছেলেখেলা করা। নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ যাতায়াত জনগণের মৌলিক অধিকার।

আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট ব্যুরো

Location :

Sylhet
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি বিএনপির
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি বিএনপির |নয়া দিগন্ত

সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ে ‘গণঅবস্থান ও মানববন্ধন’ কর্মসূচি পালন করেছে জেলা বিএনপি।

আজ সোমবার দুপুরে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক শুধু একটি রাস্তা নয়, এটি সিলেটবাসীর প্রাণরেখা। অথচ সরকারের অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতায় এটি আজ মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটছে, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বছরের পর বছর সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও বাস্তব উন্নয়ন নেই। সিলেটবাসী আর বঞ্চনা সহ্য করবে না।’

কাইয়ুম চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘সিভিল সার্ভিস, সামরিক বাহিনী কিংবা জাতীয় রাজনীতির কোথাও সিলেটের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নেই। সরকারের উপদেষ্টা পরিষদেও সিলেটের কেউ নেই। ফলে পুরো বিভাগ এক ধরনের শূন্যতায় ভুগছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতা তারেক রহমানের প্রস্তাবিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচিতে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের সুস্পষ্ট রূপরেখা রয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট পেলে বিএনপি সিলেটের উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সরকারকে এখনই সিলেটবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু চট্টগ্রামে তিন ঘণ্টায় যাওয়া সম্ভব করলেই হবে না-সিলেটকেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নাজুক অবস্থার দ্রুত প্রতিকার দাবিতে আগামী ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।

কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিগত ১৭ বছরের আওয়ামী শাসনে সিলেটবাসী দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন পায়নি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিমানবন্দর-সবক্ষেত্রেই সিলেটকে চক্রান্ত করে বৈষম্যের মধ্যে রাখা হয়েছে। বিএনপি সরকারের সময় যে সামান্য উন্নয়ন হয়েছিল, তা আওয়ামী আমলে থমকে গেছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘সিলেটকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। তিন দফা ভয়াবহ বন্যার পরও পুনর্বাসনে কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। অন্যদিকে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বড় প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সিলেটে গ্যাস উৎপাদন হলেও এখানকার মানুষ গ্যাস সংকটে ভোগে। রেলপথে ট্রেন সময়মতো আসে না, কোচগুলো জরাজীর্ণ, বিমানের ভাড়াও অস্বাভাবিক। তিন পথেই আমরা বৈষম্যের শিকার।’

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থায় অবহেলা মানে জনগণের জীবনের সঙ্গে ছেলেখেলা করা। নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ যাতায়াত জনগণের মৌলিক অধিকার।’

নেতৃবৃন্দ দাবি জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দ্রুত সংস্কার, অতীত প্রকল্পে দুর্নীতির তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি, দুর্ঘটনা রোধে বিকল্প ট্রাফিক ব্যবস্থা, নিহত-আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান।

তারা বলেন, ‘এ আন্দোলন দলীয় নয়, এটি সিলেটবাসীর ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন।’

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ধানের শীষ গণতন্ত্র, অধিকার ও মুক্তির প্রতীক—এ প্রতীকের বিজয়ের মাধ্যমেই জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।’

গণঅবস্থানে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তাজরুল ইসলাম তাজুলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নজমুল হোসেন পুতুল, অ্যাডভোকেট হাসান পাটোয়ারী রিপন, ফালাকুজ্জামান চৌধুরী জগলু, ডা. এনামুল হক, অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সুয়েব, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, বদরুল ইসলাম জয়দু, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ, আব্দুল কাদির সমছু, অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমেদ, আলী আকবর আলী, মাহবুব আলম, মনিরুল ইসলাম তুরন, আবুল হাসনাত, ফজলে রাব্বি আহসান, শাহিন আলম জয়, আপ্তাব উদ্দিন, ছাদিকুর রহমান টিপু, রেজাউর রহমান চৌধুরী রাজু, ফখরুল ইসলাম পাপলু, জামাল মেম্বার, আব্দুল মালিক মল্লিক, সাহেদ মেম্বার, রুহুল আমীন, আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতা, পাবেল রহমান রাশেদুল হাসান চৌধুরী, দিনার আহমদ শাহ, রায়হানুল হক, মো. শাহিন আহমদ, মেহেদি হাসান রফি প্রমুখ।