ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বানে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে একযোগে উপজেলা পরিষদ ও থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে অবরোধকারীরা প্রথমে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষে তছনছ ও ভাঙচুর করে। একই সময়ে হামলা হয় ভাঙ্গা থানায়। এ সময় থানার পুলিশ সদস্যরা ভেতরে আটকা পড়েন। হামলাকারীরা থানায় উদ্ধার করে রাখা একটি অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগ করে। প্রায় আধঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। রিপোর্ট লেখার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফরিদপুর-৪ আসনের পুনর্বিন্যাস বাতিলের দাবিতে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের ডাকে রোববার থেকে তিন দিনের সকাল-সন্ধ্যা মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
আজ সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উপজেলা পরিষদ এলাকায়। গ্রামে মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্রসহ অবরোধে যোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বেলা ১১টার দিকে ভাঙ্গার আলগী এলাকায় আন্দোলনকারীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর বেলা ১২টার দিকে অবরোধকারীরা থানার সামনে অবস্থান নিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা প্রতিহত করে। এরপর গ্রামে ঢাল, সড়কি নিয়ে অবরোধে অংশ নেয়ার জন্য পুনরায় মাইকিং করা হয়।
সকাল ৯টার দিকে মহাসড়কের দু’একটি স্থানে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করলেও যান চলাচলে তেমন বাধা ছিল না। তবে দুপুরের আগেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
আলগী ইউনিয়নের পাশাপাশি হামিরদী ইউনিয়ন থেকেও বিপুল সংখ্যক মানুষ রোড ব্লকেডে অংশ নেয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নেয়।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।’
এর আগে রেলপথ ও মহাসড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। থানার এসআই হাবিবুর রহমান ৯০ জনের নামোল্লেখসহ আরো ১০০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাতনামাকে আসামি করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সুয়াদি এলাকায় রাস্তার ওপর গাছ ফেলে, টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদের আসন পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত গেজেটে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে ভাঙ্গার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সাথে যুক্ত করা হয়। এর প্রতিবাদে গেজেট প্রকাশের পর থেকেই পাঁচ দিন ধরে মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা। এতে ঢাকা-খুলনা ও ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।