বরগুনায় বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

‘রিং বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশের কথা জেনেছি। জেলা প্রশাসন এসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। বৃষ্টি কমে গেলে অমাবস্যার জোয়ারের পানি কমবে।’

Location :

Barguna
বরগুনায় বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
বরগুনায় বেড়িবাঁধ সংস্কার না করায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত |নয়া দিগন্ত

গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা

বরগুনা উপকূলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙা ১৩ পয়েন্টের ৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার হয়নি আজও। ফলে গত তিন দিনের বিরামহীন বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে ওই এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যে, বরগুনায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছিল ১১০০ মিটার বেড়িবাঁধ। এর আগে প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় সিডরে বরগুনার বিভিন্ন এলাকার প্রায় সাড়ে ৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে বরগুনার নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। এতে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ডালভাঙা এলাকার একটি রিং বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রামটির কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে অন্তত ২০০টি পরিবার।

এদিকে জেলার সদর, আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, বেতাগী ও বামনা উপজেলার ১৩ পয়েন্টের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে অমাবস্যার জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিষখালী নদীর পানি বুধবার রাত থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত চার থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ওই এলাকার একটি রিং বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া মাঝের চর ও ১০ নম্বর নলটোনা ইউনিয়নের কিছু কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এতে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

ডালভাঙা গ্রামের কাদের মিয়া বলেন, ‘জোয়ারের পানি বেড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে গ্রাম তলিয়ে যায়। আমাদের রান্না করার চুলাও নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা এখন জোয়ার হলে আর ঘরে থাকতে পারছি না। আশপাশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্রও নেই যে সেখানে উঠবো। ত্রাণ লাগবে না, আমরা এ বেড়িবাঁধের দ্রুত মেরামত দাবি করছি।’

ওমর ফারুক সাবু নামের আরেক বাসিন্দা জানান, ‘সমুদ্রের নিম্নচাপ হয়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই জোয়ারে আমাদের এলাকা তলিয়ে যায়। এটা প্রতি বছরই হয়। এ সময় পরিবার নিয়ে আমরা আতঙ্কে থাকি।‘

মাছেরখাল এলাকার জব্বার হাওলাদার বলেন, ‘জোয়ারে পানি উঠতেছে আবার ভাটার সময় নেমে যাচ্ছে। এখানের রাস্তাও ধসে গেছে। এখন হেঁটে যাওয়ার মত অবস্থাও নেই। এখানে দ্রুত পানি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি আমাদের।’

এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল বলেন, ‘রিং বেড়িবাঁধ উপচে পানি প্রবেশের কথা জেনেছি। জেলা প্রশাসন এসব এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। বৃষ্টি কমে গেলে অমাবস্যার জোয়ারের পানি কমবে।’